সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
চাষাঢ়া রেল স্টেশন দিনে দিনে অপরাধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। আগে থেকেই এখানে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন চলে আসছে। নতুন করে যোগ হয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। প্রায় প্রতিদিন ফতুল্লা, পাগলা, গেন্ডারিয়া এমনকি কমলাপুর থেকেও দল বেধে এ স্টেশনে আসে। এরপর পান থেকে চুন খসার অপরাধে প্রতিপক্ষকে মারধর করে ওরা। ইভটিজিংসহ নানা ধরনের অপরাধ করলেও বিষয়টি আমলে নেয়না সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় অনেকে নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। চাষাঢ়া রেলস্টেশনকে নিরাপদ ভেবে বিভিন্ন এলাকার কিশোর অপরাধীরা দল এখানে আসে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
তারা জানান, এখানে এসে কোন বাধা ছাড়া আড্ডা মারা যায়। হৈচৈ করা যায় সেই সাথে সিগারেট-মাদক সেবনে সমস্যা নাই। একারনে ওরা চাষাঢ়া রেলস্টেশনকে টার্গেট করেছে। এছাড়া সরকারী তোলারাম কলেজ, সরকারী মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা ছাত্রিদের ইভটিজিং করতেও আসে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ট্রেনে চড়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কমলাপুর, গেন্ডারিয়া, পাগলা, ফতুল্লা থেকে চাষাঢ়া রেল স্টেশনে এসে ভিড় জমায়। এখানে দীর্ঘক্ষন অবস্থান নেয়। পরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কটুক্তি, ছেলে মেয়ে একসাথে দেখলে অশালীন ভাষায় মন্তব্য করে। তাদের কেউ কিছু বলতে গেলেই শুরু হয় ঝগড়া। কেউ কেউ এলাকার প্রতিপক্ষকে ধরতে স্টেশনে গ্রুপ নিয়ে অপেক্ষা করে। সূত্র জানায়, এসব কিশোর গ্যাং সদস্যরা কোন কোন নেতার অনুগামী থাকে। ওইসব নেতার পক্ষে তারা মিছিল মিটিংয়ে যোগ দেয়। কোন সমস্যা হলে নেতারা তাদের শেল্টার দেয়।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রায় ৪০ জনের একটি কিশোর গ্যাং দু’টি ছেলেকে ধরে নিয়ে আসে। পরে প্লাটফর্মের নিচে কিল ঘুষি ও এলোপাথাড়ী মারধর করতে থাকে। এসময় প্লাটফর্মে থাকা যাত্রীরা সকলেই এ চিত্র দেখার পরেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। শনিবার রেলস্টেশনে ২০-২৫ জন যুবক মিলে দুই শিক্ষার্থীকে ঘেরাও করে রাখে। পরে তাদের চর থাপ্পর ও অশ্লীল মন্তব্য করে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।
রোববার একটি মেয়েকে কটুক্তি করে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। পরে মেয়েটি তার একজন পরিচিত মানুষকে বিষয়টি জানালে তিনি ঘটনাস্থলে এলে শুরু হয় বাক বিতন্ডা।
রেল স্টেশনের উপস্থিত সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বিনা কারণে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মানুষের পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়ার সৃষ্টি করে। সম্প্রতি অচেনা মুখের কিছু দল এসে ভিড় জমায় চাষাঢ়া লেল স্টেশনে। পরে সেখানে বসে তারা লাগাতার ধুমপান ও উচ্চস্বরে গান গায়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে প্রশাসন সবসময়ই তৎপর। চাষাঢ়া রেল স্টেশনের তাদের আনাগোনার বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কিশোর গ্যাং অপরাধ করার সময় কিংবা যেকোন জায়গায় অবস্থানরত সময় যদি কেউ পুলিশকে ইনফর্ম করে তাহলে ভালো হয়। তিনি চাষাঢ়া স্টেশনের বিষয়ে তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।