আজ বুধবার, ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চাষাঢ়ায় অস্ত্রসহ পত্রিকার সম্পাদক গ্রেফতার

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানার নিউ চাষাড়া জামতলা ধোপাপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া এনজিও ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল। গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন সাইদুজ্জামান নুর ওরফে রাকিব (৪১)। গত ১২ নভেম্বর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে কথিত ‘নুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন’ ও ‘নুর পোভার্টি এলিভিয়েশন এন্ড হিউম্যান রাইটস সোসাইটি’ নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। এছাড়াও ‘দৈনিক মানবতার আলো’ ও ‘নিউজ ডাইজেস্ট ওয়ার্ল্ড’ নামক দুটি বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার স্বঘোষিত সম্পাদক। অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামীর হেফাজত হতে ০১টি পিস্তল (আগ্নেয়াস্ত্র সদৃশ), ২(দুই) রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ১টি সিলভার রংয়ের ম্যাগাজিন, ১টি কালো রংয়ের পিস্তল কাভার, ০১টি ডিজিটাল লকার বক্স, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১ পাতা মূল সদস্যগনের অর্থ প্রদানের তথ্যাবলী, ৫টি মানি রিসিপ্ট বই, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সীল ৮টি, ভুয়া পদক ৫টি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সীলগালা যুক্ত খাম ২৭টি, নুর দরিদ্র বিমোচন ও মানবাধিকার সংগঠনের ১০টি অঙ্গীকারনামা জব্দ করা হয়।

শুক্রবার ( ১৩ নভেম্বর) বিকালে র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সিপিএসসি আদমজীনগর) মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী সাইদুজ্জামান নুর ওরফে রাকিব ফতুল্লা থানাধীন জামতলা ধোপাপট্টি এলাকায় জনৈক হাজী শামছুল হুদার ফ্ল্যাট বাসায় ভাড়ায় থাকতো। ঐ ভাড়াকৃত ভবনের ছাদে সে ‘নুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ও নুর পোভার্টি এলিভিয়েশন এন্ড হিউম্যান রাইটস সোসাইটি’ নামক সরকারী অনুমোদনবিহীন প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র এসএসসি পাশ হলেও নিজেকে সবসময় সে উচ্চ শিক্ষিত প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। সুসজ্জিত অফিস কক্ষে সে তার নিজের ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্জিত বঙ্গবন্ধু পদক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পদক, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ পদক, মাদার তেরেসা পদক ও মহাত্মা গান্ধী শান্তি পদকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পুরষ্কার পাওয়ার ভুয়া স্মারক ও জাল সার্টিফিকেট সাজিয়ে রেখে লোকজনকে আকৃষ্ট করত। নিজেকে ক্ষমতাবান ব্যক্তি বোঝাতে সে সবসময় আগ্নেয়াস্ত্র সদৃশ পিস্তল ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের মনে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিল। মানবসেবার জন্য তার প্রতিষ্ঠানের নামে রাশিয়া থেকে ১০০ কোটি টাকার অনুদান এসেছে, উক্ত টাকাগুলো জনকল্যানের জন্য ব্যবহার করতে প্রসেসিং ফি বাবদের কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করে। গ্রেফতারকৃত আসামী সাধারণ মানুষদের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ভুয়া নথিপত্র প্রদর্শন করে ফাঁদে ফেলে তাদের নিকট হতে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। অনুদানের টাকা না পেয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে সে তাদেরকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ কর্তৃৃক ব্যপক অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, সে ভুয়া এনজিও ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে শতাধিক ব্যক্তির সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এ যাবতকালে কায়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।