সংবাদর্চচা রিপোট:
আমারে চিনস আমি নাজিম উদ্দিন সাইনবোর্ডের বাঘ! সাইনবোর্ডে সাংবাদিকতা করবি আমারে না জিগাইয়া। মারধর করার সময় এই কথা বলেছিল সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন। গতকাল সাংবাদিক মোক্তারের কাছে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
অপরদিকে, আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছক) জানান, কাউন্সিলর বাবুর পূর্ব পরিচয় তারা মাইড়া ছিল। তার মা পতাকা উঠাতে গিয়ে গুলিতে মারা গেছে এটা নারায়ণগঞ্জবাসী জানে!
অন্যদিকে ফতুল্লার ভূইগড়ের রূপায়ন টাউনে চাদাঁ দাবীকে কেন্দ্র করে নাজিম উদ্দিনের ক্যাডার বাহিনীর হামলার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো.আসলাম দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন “রূপায়ন টাউনের ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তবে অনেক পলাতক রয়েছে।
এছাড়া চাদাঁবাজির মামলায় কারাগারে কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর বিষয়ে জানতে চাইলে র্কোট পুলিশের কর্মকর্তা ওসি দৈনিক সংবাদচর্চাকে জানায়, কারাগারে রাজনৈতিক ব্যক্তি যে সকল কারাবন্দীরা রয়েছেন তাদের মশা মারা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। কারন তারা সাধারণ কারাবন্দীদের চেয়ে একটু ভিন্নতা প্রশন করেন।
উল্লেখ্য সম্প্রতি ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে অডিও টেপ । সাতাশ সেকেন্ডের অডিওতে নাজিম উদ্দিন এক পর্যায়ে বলেন বেইল নাই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর।
এছাড়া স্ত্রীর দায়ের করা মামলা, সাংবাদিকে পেটানোর অভিযোগে মামলাসহ চাদাঁবাজি ও লোটপাটের অভিযোগে মামলা রয়েছে এই নেতার বিরুদ্ধে।
এছাড়া গত ১৮ এপ্রিল শহরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে বন্দর থানায় দায়ের করা একটি চাঁদাবাজি মামলায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে নাসিকের ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুকে।
প্রসঙ্গত্ব, ৭০ লাখ টাকা চাদাঁ দাবীকে কেন্দ্র করে নাজিম উদ্দিন বাহিনীর ক্যাডারা হামলা করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সালাম আজাদসহ তার পরিবারের উপর। এসময় আরো আহত হয় মানবজমিন পত্রিকার ফতুল্লাহ প্রতিনিধিসহ কয়েকজন।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ফতুল্লার ভূইগড়ের রূপায়ন টাউন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ভূইগড় রূপায়ন টাউনের ফ্ল্যাট মালিক আবু সাঈদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়।
অপরদিকে, আব্দুল করিম বাবু হাসানের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় ডিস ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি প্রদান করেন। ওই ঘটনার পর গেল মাসের ২৩ তারিখে হাসান বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বাবুকে প্রধান আসামী করে। এতে আব্দুল করিম বাবু আরো বেপরোয়া হয়ে সোনাকান্দা, আলীনগর এলাকায় বাবু তার বাহিনীর মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে ডিস লাইন সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু করে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ ওই ব্যবসায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি ডিস বাবুর নানা অপকর্ম তুলে ধরেন।
এছাড়া গত রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ এলাকার মোক্তার স্যাটেলাইটের মালিক মো. মোক্তার হোসেন ও পুলিশ লাইন্স এলাকার স্যাটেলাইট ব্যবসায়ী কুসুম বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। দু’টি মামলাতেই ডিস বাবুকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।
এছাড়াও উভয় মামলাতে বাবুর ৮ সহযোগিকেও আসামী করা হয়েছে। তারা হলেন, বাবুর মালিকানাধিন এসবি স্যাটেলাইট এন্ড ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের মেইন লাইন রিপিয়্যারম্যান ও বাংলাবাজার সরদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা রিপন (৪২), হোসেন মিয়ার ছেলে সেন্টু (৩২), রেজাউল করিম (৫৮), বাংলাবাজারের শাহজাহানের ছেলে চুন্নু মোল্লা (৪০), মমিন (৪৫), জুয়েল প্রধান (৪৮), রাজু প্রধান (৪২) ও জাহাঙ্গীর (৪০)কে আসামী করা হয়েছে।