আজ শুক্রবার, ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘর গোছাতে ব্যর্থ জেলা ও মহানগর যুবলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ: পর পর দুইবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এত বছর ক্ষমতায় থাকার পরও ঘর গোছাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগ। তিন বছর পর পর কমিটি নবায়ন করার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘ ১ যুগ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নতুন কোন কমিটি গঠন করতে পারেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগ।

অথচ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে আওয়ামী যুবলীগকে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ কাঁপিয়ে ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগ। সেই আমলের যুবলীগ এখন যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যে এসে পৌঁছেছে। জেলা যুবলীগের নেতারা সিনিয়র নেতায় পরিণত হয়েছেন। ইতিমধ্যে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন। তবে তিনি এখনো যুবলীগের পদ থেকে অব্যাহতি নেননি।

জানা যায়, ২০০৫ সালে ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ব্লকের নেতা হিসেবে পরিচিত আব্দুল কাদিরকে সভাপতি ও শামীম ওসমান ব্লকের নেতা আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে সাধারন সম্পাদক কমিটি গঠন করা হয়েছিল জেলা যুবলীগের। এছাড়া জাকিরুল আলম হেলালকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, আসিফ হোসেন মানুকে সহ-সভাপতি ও শাহ নিজামকে করা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

এদের মধ্যে শাহ নিজাম মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাকিরুল আলম হেলাল মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাছাড়া সেই কমিটির অনেক নেতা বর্তমানে নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠনের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মহানগর কমিটি গঠন হয়নি। পূর্বগঠিত শহর কমিটি দিয়েই মহানগরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু সভাপতি ও আলী রেজা উজ্জলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধে লিপ্ত হয়ে যান তারা। কারণ এরা দুইজন দুই ব্লকের রাজনীতি সাথে জড়িত। তারা আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে থাকেন।

এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু নিজের শহর যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও আলী রেজা উজ্জল নিজেকে মহানগর যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন।

অন্যদিকে শহরের বাইরে যুবলীগ বলতে গেলে ফতুল্লায় মীর সোহেল আলী ও ফাইজুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জে মতিউর রহমান মতি, বন্দরে আইনজীবী নেতা হাবিব আল মুজাহিদ পলুকেই চিনে থাকে। এই গুটি কয়েক নেতা ছাড়া অন্যদেরকে সবাই নামধারী যুবলীগ নেতা হিসেবে চিনে।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, এভাবে কমিটি বিহীন চলতে থাকলে কর্মী-সমর্থকরা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তাই যত দ্রুত সম্ভব নতুন কমিটি গঠন করে নেতাকর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে হবে। কারণ যুবলীগ থেকে তৈরী হয়ে আসা নেতাকর্মীরাই মূল দলের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। এছাড়া সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে হলে অতি দ্রুত কমিটি দেয়া উচিত।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, যুবলীগের কমিটি আসলে কেন্দ্রীয়ভাবেই হয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের কিছু করার থাকে না। তবে যে কোন সময় নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।

শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু বলেন, দলের স্বার্থে ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব নতুন কমিটির ঘোষণা করা উচিৎ। তাছাড়া সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই দলের স্বার্থের কথা চিন্তা করে হলেও কমিটি দেয়া হক।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ