আজ শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গোলাম আযমের আত্মীয় নই, আমি মুক্তিযোদ্ধা’: নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, তার সঙ্গে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী নেতা গোলাম আযমের আত্মীয়তার সম্পর্কের অভিযোগ মিথ্যা। নিজেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধা এবং আওয়ামী লীগের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের শ্যালক বলেও দাবি করেছেন।

সোমবার নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি।

হাবিবুর রহমানকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার পর শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মনোনয়ন বঞ্চিত কয়েকজন দাবি করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম আযমের আত্মীয়। অবশ্য দুই জনের মধ্যে কী ধরনের আত্মীয়তা সেটা তারা জানাননি। তারা এমনও অভিযোগ করেন যে, গোলাম আযমের কলেজে হাবিবুর শিক্ষকতা করেন।

পরদিন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অভিযোগ তারা খতিয়ে দেখবেন। হাবিবুর গোলাম আযমের আত্মীয় হলে তার মনোনয়ন বাতিল হবে।

এই প্রেক্ষিতে হাবিবুর তার বক্তব্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তিনি জানান, তার রাজনৈতিক দীক্ষা মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই। ছাত্র জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে রাজনীতি করেছেন। ১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে এই দেশের জন্য লড়াই করেছেন।

‘রাজাকার, আলবদর ও যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে এখনো আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমি প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান সাহেবে শ্যালক; গোলাম আযমের পরিবারের সাথে বা তার কোন প্রতিষ্ঠানে আমি কোন অবস্থাতেই জড়িত নই, কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল ও দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তে দলের হাবিবুর রহমান স্টিফেনকে একক প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল। পরে কেন্দ্র থেকেও এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই উপজেলায় দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ১৯ জন। এদের মধ্যে জহির উদ্দিন সিদ্দিক, সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস ও আল-আমীন হাবিবুরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন।

হাবিবুর ৯০ দশক থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন, বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হয়ে ন্যয়নীতি অনুসরণ করে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে আসছি।’

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা তিন মনোনয়নপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থারও দাবি করেন হাবিবুর। বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনের পর হাবিবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা নেতাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভও হয় নবীনগরে। একটি প্রতিবাদ মিছিল উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণও করে।

নবীনগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন নসু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজিত কুমার দেব, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী শাহানও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন শফিউল আলম, জসিম উদ্দিন, মোশারফ হোসেন সরকার, ইয়াবের হাসান জামিল, আজাহার হোসেন, পিন্টু ভদ্র, মইনুল সিকদার, জাকির হোসেন সাদেক, নাজির উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়া শেখ রেহানার শাশুড়ির নিকট আত্নীয় হাবিবুর রহমান।