নিজস্ব প্রতিবেদক:
শহরে বিভিন্ন মৌসুমকে সামনে রেখে প্রায় ৫/৬ কোটি টাকার চাঁদা আদায় হয় হকাদের থেকে উল্লেখ করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, এই চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা হকার নেতা, রাজনীতিবিদ, সন্ত্রাসী, দালাল ও প্রশাসনের লোকজন পেয়ে থাকে। তাদের এই ভাগ বাটোয়ারার প্রয়োজনে তারা হকারদের জন্য মায়া কান্না দেখাচ্ছে। হকারদের বন্ধু ঘোষণা দিয়ে তারা চাঁদাবাজিকে বৈধ করতে চায়। আজ আমাদের রাজপথে নামার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিগত কয়েক মাস ধরে হকার ইস্যূকে পুঁজি করে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছে। উন্নত নগরীর পরিকল্পনা গ্রহন না করে এ শহর নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। যার প্রধান কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি। গ্রাম থেকে নিঃস্ব মানুষদের পুঁজি করে কতিপয় রাজনীতিবিদরা তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবার জন্য কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করছে।
‘বঙ্গবন্ধু সড়ক হকারমুক্ত রাখতে হবে ও ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতে ঐক্যবদ্ধ হোন’ দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি। বুধবার (৯ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রাব্বি বলেন, যে হকার সিটি কর্পোরেশন থেকে দোকান নিয়ে ৫/৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে আবার ফুটপাতে বসে পড়ে সে কিভাবে হকার নেতা হয় ? আমি হকারদের কাছে জানতে চাই, এমন সুবিধাভোগী চাঁদাবাজকে কিভাবে আপনারা নেতা বানান? আপনাদের নেতাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে চাঁদাবাজি।
রফিউর রাব্বি বলেন, পরিবহন, হকার আর অবৈধ স্ট্যান্ডে তারা শহরকে বাস অনুপযোগী করে তুলেছে। বাস, টেম্পু, লেগুনা, ট্রাকের অবৈধ স্ট্যান্ড বসিয়ে কোটি কোটি টাকা যাচ্ছে চাঁদাবাজদের পকেটে। এই চাঁদার জন্য ভয়ভীতি থেকে শুরু করে খুন-খারাবী করতেও পিছপা হয় না। এর সাথে তারা মাদকের ব্যবসাতেও জড়িত। সরকারের তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরীর পত্রিকায় মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেটের নাম ছাপা হয়েছে। এতে কক্সবাজারের বদির সাথে নারায়নগঞ্জের গডফাদারেরও নাম রয়েছে। মাদক, পরিবহন ও হকার থেকে চাঁদা উত্তোলনকারীরা আবার ওয়াজ নসিহতও করে বেড়ায়।
সুতরাং যারা হকার আছেন তারা সাবধান হয়ে যান। আপনার মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে তারা। রুটি রুজির কথা বলে পুরো নগরীর সার্বিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেয়া হবে এটি মেনে নেয়া যায় না। আমরা আমাদের এই নগরকে আদর্শ নগর হিসেবে দেখতে চাই। আমরা সিটি কর্পোরেশনের কাছে দাবি জানাই, কোন অজুহাতে কিংবা মৌসুমকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসতে দেয়া যাবে না। আমরা পুলিশ প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থান আশা করি। যারা এখনো বসতে পারেনি এমন ৫০০ জনের তালিকা গ্রহন করে তাদের বসার ব্যবস্থা করুন। কিন্তু ৫০০ জনের জন্য ৪ লক্ষ নগরবাসীর দুর্ভোগ ডেকে আনা যাবে না।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, কোনভাবেই বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত হকার বসতে পারবে না, গাড়ি পার্কিং করতে পারবে না এমনকি রিকশাও পার্কিং করতে পারবে না। শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জবাসী এ ফুটপাত ব্যবহার করবে। হকারদের বিপদগামী করে গত ১৬ জানুয়ারি মেয়রের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণ করা হয়েছে। সেই সময় সাংবাদিক সহ অনেকে আহত হয়েছে। কিন্তু দোষ পড়েছে হকারদের। তবে হকাররা গুন্ডামী করে না। হকারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন অবস্থাতেই এ ফুটপাতে হকার বসতে পারবে না। রোজার আগে পরে, ঈদের আগে পরে কোন সময় না ১২ মাস ফুটপাত হকার মুক্ত থাকবে। যেকোন মূল্যে ফুটপাত মুক্ত থাকবে। এই ফুটপাত হকার মুক্ত রাখতে শুধু পুলিশ নয়, আমরা নাগরিকরাই যথেষ্ট।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক, সাধারন সম্পাদক আবদুর রহমান, ন্যাপ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গনসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর হোসেন মোল্লা, শরিফ মহাসিন প্রমুখ।