আজ শনিবার, ২০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কোটি টাকার নকল কসমেটিকস না’গঞ্জে

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বির্ভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিভিন্ন প্রকার কসমেটিকস। দেশেও উৎপাদন করা হয় বিভিন্ন প্রকার কসমেটিকস। এসকল কসমেটিকস অধিকাংশ থাকে নকল।

ব্যবসায়ীদের আমদানিকৃত কসমেটিকস গুলো স্টিকার, বক্স, পরিবর্তন করে বাজারে বিদেশী পন্যের মূল্যে বিক্রি করে। ঈদকে সামনে রেখে প্রসাধনীর মার্কেট গুলোতে নারী ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। উৎসব কে ঘিরে নারী ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি বাড়ছে প্রসাধনী মার্কেট ও দোকান গুলোতে। কিন্তু ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে বাজারে যে সকল প্রসাধনী দেখা যাচ্ছে তাতে বোঝার উপায় নেই কোনটা আসল নকল।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে ছেয়ে গেছে নকল কসমেটিকস। গতকাল সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জের, চাষাড়া খাজা সুপার মার্কেট, সায়াম প্লাজা, জাকির সুপার মার্কেট, ১ নং রেল গেইটের ফলপট্টি এলাকার মার্কেট গুলোতে দেখা গেছে নারী ক্রেতাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বিদেশী প্রসাধনী মিশ্রনে অনুমোদনহীন তৈরি ও বিভিন্ন ব্যক্তি তৈরি অবৈধ ও নকল প্রসাধনী বিক্রি করছে। এসকল প্রসাধনী ব্যবহারে অত্যন্ত ঝুকি পূর্ণ বলে জানা গেছে।

কালির বাজার ফেন্স মার্কেটের ক্রেতা জান্নাতুল ফেরদৌসী রিতু বলেন, আইলেন ৮০ টাক থেকে ১২০ ও ২৫০ টাকা। তবে তিনটি পন্যই একি কিন্তু তারা বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে ক্রেতাদের ধোকা দিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার এরা ব্যবসায়ী না এরা অসাধু ব্যবসায়ী।

চাষাঢ়া খাজা মার্কেট থেকে নারী ক্রেতা স্বপ্না আক্তার বলেন, গোরিলা, ডিও, স্কিন সাইজসহ মেয়েদের জন্য তৈরি করা ফর্সা হওয়ার ক্রীম সবচেয়ে বেশি ক্রয় করেন ক্রেতারা। ক্রীম গুলো ২২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। ২২০ টাকায় আসল পাওয়া গেলেও ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নকলকে আসল বলে ক্রেতাদের ধোকা দিয়ে বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা। আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি। নারীদের জীবন ধংস করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া ১নং গেইট এলাকা থেকে প্রসাধনী ক্রয় করতে আসা তাহমিনা খানম বলেন, এখানে পাইকারি দোকানে আমরা প্রসাধনী (কসমেটিকস) কিনতে আসি আসল পন্য ও কম দামে ক্রয়ের জন্য। কিন্তু দেখা যায় বেশির ভাগ পন্য নকল থাকে। এতে আমরা ক্রেতারা বিভ্রান্তিতে পড়ে যায় আসল-নকল পন্য চিনতে। প্রায় আমরা নকল পন্য আসল পন্যর দামে ক্রয় করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। আমরা প্রত্যাশা করি প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।

ডিআইটি এলাকার প্রসাধনী বিক্রেতা ফয়সাল আহম্মেদ জানান, সেন্ট গুলো ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে নারায়ণগঞ্জের বাজারে আসে। চক-বাজার ও গুলশান ডিসিসি মার্কেট থেকেও আসে এছাড়া অনেক ড্রিসটিবিউটরের মাধ্যমেও আসে বাজারে। এছাড়া নারীদের পন্য বিভিন্ন কোম্পানীর ক্রীম গুলো বেশি বিক্রি হয় তবে এ সকল ক্রীম গুলোতে নকলের সংখ্যা বেশি।

শহরের ১ নং গেইট এলাকার বিক্রেতা হোসাইন আহম্মেদ জানান, দেশের সবচেয়ে বেশি আমদানি কারক চক-বাজারে এসকল আমদানি করা বেশির ভাগ পন্য আমদানি করে চায়না থেকে । কিছু আসে ভারত পাকিস্থান থেকে।
নকল চেনার উপায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা তো বলা যাবে না! সব বাজারে একি অবস্থা তবে আমরা ১ নং গেইট ফলপট্টির ব্যবসায়ীরা যেই পন্য ৯০ টাকা বিক্রি করি সেই পন্য গুলো চাষাঢ়া ও ডিআইটি মার্কেটে ২০০ টাকার অধিক বিক্রি করে থাকে। নারায়ণগঞ্জে ড্রিসটিবিউটরা বিভিন্ন প্রসাধনী পন্যের ড্রসটিবিউশন করেন। সাধারণ সম্পাদকের কাছে ড্রিসটিবিউশন সর্ম্পকে জানতে পারবেন।

নারায়ণগঞ্জের ফলপট্টি এলাকায় ড্রিসটিবিউটরদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে অফিসে গেলে। তিনি সংবাদকর্মীর কথা শুনে কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করে তাদের চলে যেতে বলেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক জানান, প্রসাধনী বিক্রেতারা বাজারে নকল পন্য দিচ্ছে ক্রেতাদের যে সকল স্থানে নকল প্রসাধনী বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনের সহকারী পরিচালক তাহমিনা আক্তার জানায়, যারা নকল প্রসাধনী পন্য বিক্রি করছে তাদের তথ্য পেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুথিকা সরকারের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।