নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিক্ষার মান নয়, বানিজ্যের কদর বেশি। আর তাই কোটি টাকার কোচিং বানিজ্যে জড়িয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় ফতুল্লার বক্তাবলীর কানাই নগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। আর এনিয়ে সম্প্রতি এই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কানাই নগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোচিংয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র তুলে দিয়ে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের মেধাহীন করার পাশাপাশি তাদের অনিয়ম দুর্নীতি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ক্লাসে ঠিকমত না পড়িয়ে ছাত্রছাত্রীদের কোচিংমুখী করার অপচেষ্টা ও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে শিক্ষার মান দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে আর এ শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্টের জন্য কানাইনগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোচিং ব্যবসাকে দায়ী করছে সচেতন এলাকাবাসী।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় বক্তাবলি এলাকার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ কানাইনগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে চালিয়ে আসছেন কোচিং ব্যবসা। আর এ ব্যবসার কারনেই ওইসব শিক্ষক শ্রেনীকক্ষে ঠিকমত পাঠদান না করে শিক্ষার্থীদের কোচিংমুখী করতে বাধ্য করছেন বলে ও অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা অনায়াসে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মান সম্পন্ন শিক্ষা ব্যহত করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারনে নীরব। এর কারন হিসেবে একটি সুত্র বলেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক উর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করেই এ কোচিং ব্যবসা চালাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ওইসব শিক্ষকদের নানান সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক জনশ্রুতিও রয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী যে বিষয়টি লক্ষনীয় সেটি হচ্ছে যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক নন তিনি নিজেকে ওই বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে জাহিড় করে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের প্রভাবিত করেন। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জানা যায়, বানিজ্য বিভাগের শিক্ষক নুরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক আমজাদ এর উকিল জামাই হওয়ার কারনে অষ্টম শ্রেনীর মত গুরুত্বপুর্ন ক্লাসে ইংরেজী বিষয়ে পড়ান, এ সুযোগে নুরুল ইসলাম ছাত্রছাত্রীদের ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নিজের ব্যাচে কোচিং করতে বাধ্য করান। সপ্তাহে তিন দিন প্রতি ব্যাচে ৫০ জন করে প্রতিদিন তিন, চার ব্যাচ পড়িয়ে থাকেন।
রাষ্টবিজ্ঞানের শিক্ষক মোশারফ হোসেন ও ৫০/৬০ জন করে প্রতিব্যাচে সপ্তাহে তিন দিন তিন থেকে চারটি ব্যাচ পড়িয়ে থাকেন।
বিদ্যালয়ের গনিত শিক্ষক আব্দুল মান্নান খান প্রতিব্যাচে ৪০ থেকে ৫০ জন করে প্রতিদিন তিন ব্যাচে কোচিং করান।
বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক জহির উদ্দিন বারী রতন বাংলা শিক্ষক হয়ে অনুরূপভাবে সকল বিষয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। এ ছাড়া আব্দুল খালেক ও প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ৯ ম শ্রেনীর ১৭ জন ছাত্রছাত্রীকে ব্যাচে পড়ান।
বিদ্যালয়টিতে সকালে একটি কিন্টারগার্টেন শাখা রয়েছে। এলাকার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উচ্চ খরচে এই কিন্টারগার্টেন এ ভর্তি করান। এখানেও ছেলে মেয়েদের প্রাইভেটের পাশাপাশি ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের কোচিং বাধ্যতামুলক। এ কোচিং বানিজ্যের সাথে জড়িত বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন ইন্টারমিডিয়েট পাশ শিক্ষক মজিবুর রহমান তিনি কিন্টারগার্টেনের ও শিক্ষক।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোচিং ব্যবসার সাফল্য দেখে অষ্টম শ্রেনীর সকল শিক্ষার্থীদের মাসিক ৬০০ টাকা জনপ্রতি আদায় পুর্বক কোচিং বাধ্যতামুলক করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন আমরা কোচিং নয় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিশেষ ক্লাস করছি। ফি কত জানতে চাইলে তিনি জানান মফস্বলে প্রতি বিষয় একশত পঞ্চাশ টাকা জেলা শহরে দুই থেকে আড়াইশত টাকা।