আজ বুধবার, ১৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কেন্দ্রের ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো বিএনপির

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপির কমিটি প্রায় একই সময়েই ঘোষিত হয়েছিল। একদিকে কাজী মনির ও মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে জেলা বিএনপি অপর দিকে আবুল কালাম ও এটিএম কামালের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির কমিটি। তবে কাজে কর্মে বহুগুণে এগিয়ে ছিল মহানগর বিএনপি নেতাকর্মীরা। নেতাদের অলসতার ভিড়ে বার বার কর্মীরা চেষ্টা করেছে ঘুরে দাঁড়াতে। তারই ধারাবাহিকতায় অধিকাংশ শীর্ষ নেতার উপস্থিতি ছাড়াই পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী পালন করলো বিএনপির নেতাকর্মীরা। অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রের ডাক ছাড়া ঘুম ভাঙ্গে না তাদের।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ক্রমেই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে নির্বাচনের পুর্বেও বিভিন্ন মামলা হামলার অজুহাত দেখিয়ে নিজেদের দূরে রেখেছিলেন তারা। নির্বাচনের পরে এসকল ঝামেলা না থাকলেও প্রায় ৮ মাস নিষ্ক্রিয় থাকতেই যেন বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন নেতারা। মাঝে মাঝে ২ একটি কর্মসূচির ডাক আসলেও ঢিমেতালে চালিয়ে দায় সেরেছেন। তবে এবার কেন্দ্র থেকে কর্মসূচী পালন করার নির্দেশ পাবার পর জেলা ও মহানগরের বিভক্ত দুইটি গ্রুপই খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসক্লাবের সামনে প্রথম মানববন্ধন করেন মহানগর বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। তবে ব্যানারের পেছনে ছিলেন না দলটির সভাপতি ও সেক্রেটার। একই দিন বিকেলে শহরের বালুর মাঠে মানববন্ধন করেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিশাল কমিটির সদস্যদের অধিকাংশই অনুপস্থিত থাকলেও সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের উপস্থিতি চাঙ্গা করেছে কর্মীদের। একই সময়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। বেশ কয়েক দফায় পুলিশি বাধার সম্মুখীন হলেও তা উপেক্ষা করে নেমেছেন বঙ্গবন্ধু সড়কে।

তবে বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিতে সচেষ্ট ছিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উভয় গ্রুপ। কমিটির সভাপতি আবুল কালাম বেশীরভাগ সময়ে অনুপস্থিত থাকলেও এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও এটিএম কামালের নেতৃত্বে পালিত হয়েছে এসকল কর্মসূচি। তবে এটিএম কামাল বিদেশে পাড়ি জমানোয় এড. জাকিরের নেতৃত্বেই মানববন্ধন করেন কর্মীরা। অপর দিকে জেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ঘুম কাটিয়ে ফিরেছে কর্মসুচীতে। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর মামুন মাহমুদের উপস্থিতি দেখা গেলেও কমিটির সিংহভাগ নেতাকর্মীরাই ছিলেন অনুপস্থিত। তবে কর্মীরা বলছেন নেতার উপস্থিতি কর্মসূচীতে নিয়মিত হলে আবারও ফিরতে পারে কর্মীদের চাঙ্গা ভাব। তার জন্য যে উদ্দীপনার যোগান দরকার ছিল সেটি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এর আগেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে নেমেছিলেন দলটির নেতারা। যেখানে অনুমতির অপেক্ষায় থেকে জেলা ও মহানগর বিএনপির একাংশ ঢাকায় গিয়ে মিছিল করেছেন সেখানে সাখাওয়াত হোসেন খান পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই করেছেন বর্নাঢ্য র্যা লী। আর এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সামনে তাক লাগিয়ে দিয়ে কর্মীদের নজর কেড়েছেন তিনি। সক্রিয় কর্মীরা যেখানে দীর্ঘদিন রাজপথে নিজেদের প্রদর্শন করতে চাইছিলেন তারা এবার পথ পেয়ে দলের পক্ষে আগ্রহ বাড়াচ্ছেন।

দলের সংশি¬ষ্টরা বলছেন, রাজনীতি যাদের ভেতর এখনও সুপ্তভাবে বিরাজমান তারা সবসময়েই নিজেদের সক্রিয় রাখতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে তাদের সুসংগঠিত করার জন্য যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন হয় তাদের। পুরনো নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় ইতোমধ্যে নতুন করে পুর্নগঠনের গুঞ্জন উঠেছে কর্মীদের মাঝে। দ্রুততার সহিত এসব নিষ্ক্রিয় নেতাদের সরিয়ে সক্রিয়দের পদায়ন করলে নতুন মেয়াদে গঠিত কমিটি নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না কেন্দ্র কিংবা তৃণমূলের। অন্যথায় এর বিপরীত চিত্র আবির্ভুত হলে বাণিজ্যের মাধ্যমে গঠিত কমিটির নেতা পদে আসীন হয়ে দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি বয়ে আনবে।