আজ শুক্রবার, ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কাউন্সিলর ফারুকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুককে প্রধান করে ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের। ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে বাদীর মাথায় পিস্তুল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি ও আড়াইলাখ টাকার মালামাল লুটপাট করার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে বুধবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে। তার আগেও কাউন্সিলর ফারুককে প্রধান করে ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি মামলা করা হয়েছিল। পুলিশ ওই মামলাটি তদন্ত না করে এখনো ঝুলিয়ে রখেছে বলে বাদীর অভিযোগ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার মৃত আবদুল হামিদের ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম(খোকন) তার পৈত্রিক সূত্রে পাওনা পাইনাদী নতুনমহল্লা পিএম মোড় এলাকায় ৫ শতাংশ জমিতে দোকানপাট নির্মাণ কাজ শুরু করে। অর্ধেক কাজ করার পর থেকেই নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক জমির মালিকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছে। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় গত ৫ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কাউন্সিলর ফারুক দলবল নিয়ে জমির মালিকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। চাঁদা না দিয়ে কোন নির্মাণ কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে রড,সিমেন্টসহ আনুমানিক ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মনিরুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ মামলা গ্রহন করেননি। নিরুপায় হয়ে পরে তিনি আমলী আদালত (ক) অঞ্চল, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নারায়ণগঞ্জ এ পিটিশন মামলা দায়ের করে। যার নং ১৯৩/১৭ শুনানী শেষে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসিকে) নির্দেশ প্রদান করেন।যার স্বারক নং ১০৪১। আদালতের ওই নির্দশনা গত ১১ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৌছলেও ওসি আব্দুস সাত্তার রহস্যজনক কারণে মামলা রুজু না করে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপে কাউন্সিলর ওমর ফারুককে ১ নং আসামি করে গতকাল বুধবার পেনেল কোর্ড ১৮৬০ এর ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩০৭/৩৭৯/৩৮৫/৩৮০/৫০৬(॥) ধারায় ৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৫/৭ জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা রুজু করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। মামলা নং ৫১।তারিখ ১৬-১১-২০১৭ ইং। মামলার এজাহার নামীয় অন্য আসামিরা হলো মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার আয়েত আলীর ছেলে নাছির উদ্দিন(৩৪), মৃত আবদুল করিমের ছেলে আবুল হোসেন(৪৫),আলমগীর(৪২),শাহবুদ্দিন (৩৫) ও মিলন (২৮)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন এসআই জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার বাদী মনিরুল ইসলাম জানায়, আমি নির্মাণ কাজ শুরু করার পর থেকেই কাউন্সিলর ওমর ফারুক চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৮ অক্টোবর দলবল নিয়ে কাউন্সিলর ফারুক আমাকে কাজ করতে নিষেধ করে। তখন কাউন্সিলর ফারুককে প্রধান আসামি করে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারায় ৭ জনের বিরুদ্ধে আমি নারায়ণগঞ্জ মোকামঃ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থ গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু পুলিশ ওই মামলার তদন্ত রিপোর্ট এখনো আদালতে প্রেরণ করেনি। পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে আসামিরা গত ৫ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা হামলা লুটপাট চালায়। দ্বিতীয় ঘটনার মামলাও থানা পুলিশ নেয়নি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হলে বহু টালবাহানা করে অবশেষে ১৬ তারিখে পুলিশ মামলা রুজু করেছে। তবে মামলা রুজু করলেও আসামি গ্রেফতার করার কোন তৎপরতা নেই পুলিশের মাঝে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর ওমর ফারুকের সাথে কথা হলে চাঁদা দাবির অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি জানান, নালিশী জমি মনিরুল ইসলামের পিতা অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছে। সে ওই জমির মালিকনা মর্মে আবুল হোসেনগংরা আমার কাছে অভিযোগ করে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দুপক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসি। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় মনিরুল ইসলাম কিছুতেই জমির মালিক হয়না। অথ সে একই এলাকার আরেক মনিরের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। আমি সত্যের পথে থাকায় চাঁদাদাবি করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখিত তারিখ ঘটনাস্থলে আমি যাইনি। দেদিন কোন মারধর লুটপাটের ঘটনাই ঘটেনি।

সরেজমিন পরিদর্শনে আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে ঘটনা বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জয়নাল আবেদীন নামে একজন জানায়,এধরনের কোন ঘটনা ৫ নভেম্বর এখানে ঘটেনি। তবে বাদী বলছে কাউন্সিলর ফারুক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেহ মুখ খোলছেনা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ