বিশেষ প্রতিবেদক
ফতুল্লা লালপুর এলাকার গৃহবধূ আফসানা আক্তার। নিজের শিশুকে টিকা দেয়ার পর থেকেই বাচ্চাটির প্রচন্ড জ্বর। করোনা আতঙ্কে শিশুকন্যা নিয়ে হাসপাতালেও যাবার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউই। করোনাভাইরাস না হয়েও হাসপাতালে গেলে তা সংক্রমিত হবার ভয়ে যাননি। এমন পরিস্থিতিতে টিম খোরশেদের টেলিমেডিসিন সেবা নিয়ে শিশুটির চিকিৎসা সম্পন্ন করলেন আফসানা আক্তার।
জেলা জুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে শুধু টিম খোরশেদ নয়, সিভিল সার্জন থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি বেসরকারী টেলিমেডিসিন সেবা নারায়ণগঞ্জে সাধারন মানুষকে দুর্যোগকালে বিনামূল্যে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। তবে এই সেবা প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া গেলে আরও বেশী উপকৃত হতেন জেলার বাসিন্দারা এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা।
টেলিমেডিসিন সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে টিম খোরশেদের সদস্য ডাঃ তানজিলা ইয়াসমিন স্নিগ্ধা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। মানুষ করোনার কারনে একদিকে যেমন বাসায় অবস্থান করবে তেমনি অসুখের সম্মুখীন হলে রোগীরা যাতে দিশেহারা হয়ে না যায় সেজন্যেই আমাদের নিয়মিত সেবা।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে অনেক ডাক্তার বাইরে প্র্যাকটিস বন্ধ করে দিয়েছেন। অনেক ডাক্তার করোনা থেকে বাঁচার সরঞ্জামের অভাবে নিজেরাই আতঙ্কে আছেন। এসব দিক বিবেচনায় বড় একটি সমাধান এনে দিয়েছে প্রযুক্তিভিত্তিক অনলাইন ও টেলিমেডিসিন সেবা।
টিম খোরশেদের প্রধান কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, আমাদের টেলিমেডিসিন সেবায় প্রথমে ৫ জন থাকলেও বর্তমানে ১০ জন চিকিৎসক নিয়মিত ভাবে রোগী দেখে যাচ্ছেন। সম্পূর্ন বিনামূল্যে তাদের এমন চিকিৎসা সেবা পেয়ে আমরা নিজেরাও অভিভূত। আমরা মানুষকে সেবা দেয়ার একটি প্লাটফর্ম খুলেছি। আর অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী আমরা সাথে পেয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে একটি হটলাইন নাম্বার খোলা হয়েছে। সেখানে ফোন করে আমাদের কাছে তার সমস্যার কথা বলেলে আমরা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সাথে সংযোগ করে দেই। আর পুরো কাজটিই হচ্ছে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে। পাশাপাশি অক্সিজেন সেবা, প্লাজমা ব্যাংক নিয়েও আমাদের কার্যক্রম চলমান।
নাম গোপন রাখার শর্তে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, আমাদের হাসপাতালে ফোন আগে যে পরিমান সাধারন রোগী থাকতো তার ৩ ভাগের ১ ভাগও নেই। করোনার ভয়ে তারা হাসপাতালে আসতে চান না। খুব প্রয়োজন হলে বর্হিবিভাগ পর্যন্ত এসেই ডাক্তার দেখিয়ে যান। এক্ষেত্রে টেলিমেডিসিন সেবা অনেক বড় ভূমিকা রাখছে। তবে এই সেবা উপজেলা, থানা পর্যায়ে চালু করা হলে দ্রæত সেবা পাবে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্টী ।