নবকুমার:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র , ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পাবেন না বলে জানিয়েছে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে কে বড় নেতা-কে ছোট নেতা এই বিষয়টি গুরুত্ব পাবে না । জরিপে যারা এগিয়ে তাদের হাতেই উঠবে নৌকা প্রতীক।
বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী । বেলা সাড়ে ১২ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় একঘণ্টা বক্তব্য দেন তিনি।
কিছু আসনে অস্বাভাবিক সংখ্যায় মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়টিতেও নাখোশ হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেছেন, এটি ওই এলাকায় দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রমাণ। আগামীতে ক্ষমতায় এলে এগুলোরও সমাধান করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এগিয়ে থাকবে তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। সেখানে ছোট নেতা, বড় নেতা দেখা হবে না। যাকে মনোনয়ন দেব তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নইলে বিপদ হবে।’
‘ক্ষমতায় আসছি মনে করে নিজেদের মধ্যে যে আসন খাওয়া-খাওয়ির মনোভাব, তা পরিহার করতে হবে।’
‘গত দুই নির্বাচনে এনেছি, এবারো আমিই ক্ষমতায় আনব-এটা মনে করে কোনো লাভ নেই। প্রার্থীর নিজ নিজ যোগ্যতা, দক্ষতা, রাজনৈতিক ত্যাগ-তিতীক্ষা থাকতে হবে। জনসম্পৃক্ত হতে হবে।’
এবার ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের চার হাজার ২৩ জন কিনেছেন মনোনয়ন ফরম। আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে আসছেন, কাদের জনপ্রিয়তা বেশি সেটি জানতে প্রতি আসনে একাধিকবার জরিপ করা হয়েছে। আর যাদের পয়েন্ট বেশি তারাই পাবে মনোনয়ন।
আজও শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জরিপ চালিয়েছি। এর ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে। কোনো প্রার্থীর প্রতি ভোটারের সমর্থন আছে, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হবে।’
মনোনয়ন যাকেই দেয়া হোক, তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশও দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেন, ‘প্রার্থীর বিরোধিতা করা হলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। একটা সিটেও হারব- কারো এমন মনোভাব পোষণ করা যাবে না।’
বিভিন্ন আসনে অস্বাভাবিক হারে মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে নেতৃত্ব শূন্যতা রয়েছে, সেখানে যত বড় নেতাই হোক না কেন, তারা পার্টিকে অর্গানাইজ করতে পারে নাই। এটা তাদের নেতৃত্বশূন্যতার প্রমাণ।
‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ক্ষমতায় আসলে অনেক পদ ক্রিয়েট করা হবে. সেখানে সবাইকে একমোডেট করা হবে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিস্থিতিও তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সমর্থন আছে, কর্মী আছে, ভোট আছে কিন্তু ইদানীং দৃশ্যমান কর্মী নেই। ১৯৮১ সালে নেতৃত্বে এসে দলকে সংগঠিত করেছি। তিলে তিলে এই দলকে গড়ে তুলেছি। আমি, রেহানা, জয়, পুতুলসহ আমার পরিবারের সদস্যরা অনেক অসহায় সময় পার করেছি।’
‘আওয়ামী লীগকে ঠেকানোর অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু কেউ আওয়ামী লীগকে দমাতে পারেনি। এখনো নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।’