আজ মঙ্গলবার, ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালকের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক মো. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা হাফেজ মাওলানা মো. বাতেন বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ধর্ম মন্ত্রীর বরাবর মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মো. মহিউদ্দিন ২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে সরকারি যাকাতের টাকা আত্মসাৎসহ সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের টাকা, জেলার ৫টি উপজেলার শিক্ষা সামগ্র্রীর টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। মাঠ পর্যায়ে উল্লেখিত বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০১৯ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মহিউদ্দীন। এমনকি জেলার ৫টি উপজেলা পরিদর্শন না করে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইমাম সম্মেলনে যাতায়াতের জন্য গাড়ি ভাড়া বাবদ ইমামদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। নিয়ম নীতির তোয়ক্কা না করে অফিস পরিচালনা করছেন।

এদিকে উপজেলা মডেল মসজিদগুলোর দায়িত্ব থাকা অবস্থায়ও উপস্থিত না হয়ে অন্য লোকের মাধ্যমে সভা পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক হিসেবে মো. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অফিস কর্মকর্তাদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগও কম নয়। কেউ এর প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। প্রতিবাদ করলে তার পরিণতি হয় বদলি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ করলে এক ফিল্ড অফিসারকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালে সৌদি আরব থেকে মক্কা ও মদিনার ইমামদের নিয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইমাম সম্মেলন করে। ওই সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁও ও বন্দর উপজেলা থেকে আসা ইমামদের সম্মেলনে আসার জন্য স্থানীয় এমপিরা বাস ভাড়া করে দেন। কিন্তু মহিউদ্দন এই সম্মেলনকে পুজি করে ৫টি উপজেলার প্রায় ১১০০ (এক হাজার একশত) ইমামদের কাছ থেকে সম্মেলনে যাতায়াত খরচের নামে ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। এর মাধ্যমে তিনি লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা থেকে নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার, থানার ওসি, উপজেলা ইমাম ও স্থানীয় ফিল্ড সুপাইরভাইজারের স্বাক্ষরীত শিক্ষার্থীদের বাছাই তালিকা জেলায় পাঠানো হয়। পরে বিভাগীয় কার্যালয় থেকে পরিচালকদের বাছাই সীট তৈরী করা হয়। কিন্তু এই তালিকার কোন তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে তালিকা করে এই মহিউদ্দিন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক মো.মহিউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চাকে জানায়, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ সকল অভিযোগ করেছে এটা পরিস্কার। আর আমি যদি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকি তাহলে কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।

সহকারি পরিচালকের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক জানান, অভিযোগের বিষয়টি আমি জানতাম না তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিয়ষটি আমার কাছে আসলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। তিনি আরো জানান মাঠ পর্যায়ের কাজের জন্য অনেক সময় মো. মহিউদ্দিন অফিস চলাকালিন সময় আসতেন। এছাড়া আমাদের স্টাফরা কোন কিছুই আমাকে জানায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক (পার্সো), প্রশাসন মুহম্মদ আজাদ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখনো এ ধরনের কোন অভিযোগ এসে আমার কাছে পোছাঁয়নি।
তবে নারায়ণগঞ্জবাসি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকা আতœসাৎকারীর তদন্তের মাধ্যমে বিচার চায়।