আমি তো মানুষ-ই ,তোমার-সবার মতো
হয়তো পার্থক্য এখানেই- আমি মেয়ে মনুষ্য;
এছাড়া তো কোনো বহুরুপী নই!
আমারো তো কিছু কষ্ট আছে
কিংবা থাকতে পারে ব্যক্তিগত কষ্টের পাহাড়,
কিছু কষ্ট থাকতে পারে মনের ভিতর
হাসি মুখের আড়ালে,নীল রঙা আবরনে ঢাকা ।
চারপাশের মানুষগুলো তো দিব্যি হাসি খুশি,
বেলা অবেলা সারাবেলায় মন খুলে কথা বলে
নিত্য নতুন গল্পে তারা আনন্দময়ী সাজে
মনের যত কষ্টকথা সব ভাগাভাগি নেয় করে।
আমি ও তো চাই বলতে কথা সবার-ই সাথে
মিশতে চাই হাসি খুশি আর আনন্দে ,
ভূলতে চাই কিছু বলতে না পারা কষ্টকে
আমি ও তো চাই আনন্দময়ী সাজতে,
তবে কেন শুধু আমার-ই বলা হয়ে ওঠে না- মনের ভিতর এত হাহাকার বেদনা ?
কেনো কষ্ট পাই তা কাউকে বুঝাতে পারি না?
কেন আমার হাসির আড়ালে কষ্টটাই কেউ দেখে না?
কেন শুধু সবাই-ই আমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকে?
কেন শুধু মুখে বলা কথাটাই শুনতে চায়?
কী করে সবাইকে মুখে বলা যায়?
কতটা কষ্টে আমি এতটা বদলাই নিজেকে?
কতটা কষ্টে বিষে নীল হই ?
কেন কাউকেই বলা হয়ে ওঠে না আমার?
কেউ কি আছে যে আমার কষ্টটাকে বুঝবে?
কেউ কি এমন নেই এই পৃথিবীতে?
আমি ও তো মানুষই বটে
আমারো তো কিছু অভিমান থাকতে পারে
থাকতে পারে বলতে না পারা অজস্র কথা
নীরবতার আড়ালে ঢাকা সহস্র বেদনা ।
চারপাশের বহু উৎসব আয়োজনে
সবাই ই তো সবার মতো করে হাসে,সাজে
সবাই ই তো সত্যিকারের আনন্দে ভাসে
সাজিয়ে বসে সবাই সবার জীবনের পসরা ।
তবে কেন শুধু আমাকেই –
হতে হবে হাসির অভিনেত্রী?
কেন শুধু আমারই বলা হয়ে ওঠে না –
মনে জমা রাগ-অনুরাগ কিংবা কিছু অভিমান,
মনের ভিতর জমে থাকা হাহাকার বেদনায়
কিংবা একরাশ কষ্টের নিরবতা ?
সবাই ই তো পারে বলতে কখনো না কখনো,
কেন তবে শুধু আমারই বলা হয়ে ওঠে না?
সবাই-ই সবার কষ্ট শুনায় আমায়
সবার কষ্ট শুনি,কষ্ট লিখি,শান্তনা দেই
সাহসে ধৈর্যে ভরিয়ে তুলি মন প্রাণ সব।
তবে কেন শুধু নিজের বেলাতেই বলা হয়ে ওঠে না আর ?
নিজের কষ্টকথা লেখা হয় না,থেকে যায় বন্ধী
লেখা হয়ে যায় কষ্টকথা অন্য সবার-ই !
আমি ও তো মানুষই বটে
আশেপাশে সবাই এত হাসে ,সাজে
শুধু আমারই কেন একা কষ্টের সাথে
খেলার ছলে বেখায়ালে হয়ে গেল চির সন্ধী?
লেখক: নাহার রহমান নুপুর , ছাত্রী নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ।