আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া সরকারের উপর নির্ভর করছে: অলি আহমদ

তাওসিফ মাইমুন: ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক এলডিপির সভাপতি কর্নেল অলি আহমদ বলেছেন নির্বাচন হবে কি না, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো কিনা সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে সরকারের ওপর। কারণ এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই।

বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্নেল অলি বলেন, গত পরশু নির্বাচন কমিশন আইজিকে এক নির্দেশে বলেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনো মিছিল যাতে না হয় সে ব্যাপারে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য। বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মনোয়নপত্র জমা দিতে আসা সারা দেশের লাখ নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়। এতে নারী কর্মীসহ বিএনপির প্রায় ৬০/৭০ জন মারাত্মক আহত হন। এসময় খালেদা জিয়ার মনোয়নয়নপত্র জমা দিতে আসা তার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনিসুজ্জামান খান বাবু, খুলনা জেলা বিএপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খানসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর বিএনপি কার্যালয় যখন জনশূন্য তখন একদল হেটমেটধারী লোক গাড়ী ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।এই হেলমিট বাহিনী নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল। তখন কর্তব্যরত সাংবাদিকদের অত্যাচার করেছিল।

অলি বলেন, গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া যার ছবি পাওয়া গেছে সে ছেলেটি ছাত্রলীগের কর্মী বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। মাত্র কয়েকদিন আগে ক্ষমতাসীন দল চার হাজারেরও বেশি মনোনয়নফরম বিক্রি করেছে। কেউ কেউ হাতি নিয়ে ঢাকঢোল বাজিয়ে মিছিল সহকারে এসেছে। নির্বাচন কমিশন তখন কোনো নির্দেশনা বা কোনো আদেশ জারি করেনি। প্রশাসন ও পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অন্যদিকে বিএনপির জনসমাগম দেখে তারা সঙ্কিত, কম্পমান, তারা হয়তো মনে এবার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। গদি ছাড়তে হবে। এই ভয়ে তারা নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হলো। এর দুদিন আগে লাখ লাখ নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে এমন কি হলো যে গতকাল হামলা চালাতে হলো। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় সমর্থকদের সংঘর্ষে দুজন মারাগেছে। তাতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তিনি বলেন, সরকার লেভেল প্লেইংফিল্ডের কথা। কিন্তু মাঠে ময়দানে যখন আমরা যাই তখন দেখি মন্ত্রীরা এখনও পুলিশ পাহাড়ায় চলে। কয়েক দিন আগে এরশাদ রংপুরে গিয়েছিল, সেখানে তাকে পুলিশের এসপি নিরাপত্তা দিয়েছে। তাহলে বিএনপি ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদেরও পুলিশের নিরাপত্তা দিতে হবে। অন্যথায় এজন্য নির্বাচন কমিশনকে এক সময় জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে।

জাতীয় রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন যে, নির্বাচনী তফসীল ঘোষণার পর কোন রাজনৈতিক মামলা দেয়া যাবে না, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হবে না এবং গায়েবী ও মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি একথা বলার পরেও শতশত রাজনৈতিক ও গায়েবী মামলা হয়েছে এবং হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আসামী করে ঘর-বাড়িছাড়াকরাহয়েছে।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব এবং সেক্ষেত্রে বলতে চাই ২০ দল নির্বাচনে আসুক সরকার সেটা চায় কি না তাতে সন্দেহ আছে।