সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
আতাতের পথে হাটছে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। বর্তমান সরকারের কঠোর নীতির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার আতঙ্কে খালেদা জিয়ার মুক্তি অনিশ্চিত। এছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের রাজপথে দেখা যাচ্ছে না। তৃণমূলের প্রবল আকাঙ্খা থাকা সত্ত্বেও মাঠে থাকছেন না এসব নেতারা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ দলের তৃণমূল নেতাকর্মী।
তবে দলটির নেতারা বলছেন, পুলিশের মারমুখী আচরণ অতীতের যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে সরকার বিরোধী দলকে শুধু বাধাই দিচ্ছে না, চরম দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে। এজন্য বিরোধী দল মাঠে নামতে পারছে না।
শীর্ষ নেতাদের রাজপথে অনুপস্থিতির বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তৃণমুলের নেতাদের নেতৃত্বে নারায়নগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজপথের আন্দোলনে তেমন কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে বিএনপির তৃণমূল অভিযোগ করেন, চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবীতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে যারা লিপ্ত তাদের সাথে নারকীয় আচরণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এভাবে অত্যাচার করলে নেতাকর্মীরা গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করবে কিভাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, এখনকার প্রতিবাদ সভা হওয়া উচিত প্রতিবাদের মতো। সিনিয়র নেতারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন, এতে তৃণমূল উজ্জীবিত হবে। কিন্তু তাদের কার্যকলাপ আমাদের ভালো লাগছে না। পদধারী বিএনপির নেতারা কোন কর্মসূচীতে মাঠে থাকছেনা বিশেষ করে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজি মনির রাজপথের আন্দোলনে নেই। এমনকি নিজেকে আড়াল করে রাখতে শাহআলম পদ পদবি ছেড়ে দিয়েছেন। এদিকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন ও এডভোকেট আবুল কালাম অনেকাংশেই রাজপথের আন্দোলনে দেখা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক এটি এম কামাল দীর্ঘ দিন ধরেই দেশের বাহিরে ছিলেন। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও এডভোকেট সাখাওয়াত নেতাকর্মীদের কোনঠাসায় থমকে রয়েছেন। তবে মাঝে মাঝে কর্মীদের উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নিজের দলীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যান।
এদিকে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, এভাবে কর্মসূচি পালন করে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। গ্রেফতারের ভয় করলে আন্দোলন হবে না। যত দমন-নিপীড়ন, গ্রেফতার বাড়বে আন্দোলন ততই জোরদার হবে। নেতারা বলছেন দেশে এখন গণতান্ত্রিক অধিকারের ছিটেফোটাও নেই। প্রতিবাদ, মিছিল, মিটিং, সমাবেশ, গণতন্ত্রে মৌলিক অধিকার হরন করছেন। জনগনের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সরকারের পতন ঘটাতে জনগণ সময় মতো ঠিকই রাজপথে নেমে আসবে বলে মনে করেন বিএনপির এ নেতা।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক শর্তে এক নেতা বলেন, শুধু পুলিশের নির্যাতনের কারণে নয় রাজধানীতে আন্দোলন জমাতে না পারার অন্য কারণ রয়েছে। আগে সেই জায়গায় সংস্করণ আনতে হবে। আন্দোলন সফল করতে দলের মধ্যে অনেকের অনিচ্ছা রয়েছে এমন ইঙ্গিতও দেন তিনি।
তবে সময় হলেই অসহযোগ আন্দোলনের চিত্র দেখা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন অনেক নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা আরো বলেন, সরকার জনগণের কাছ থেকে গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। রাস্তায় দাঁড়ানোর মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। এরপরও রাজপথে আন্দোলন না করতে পারলেও নিজের দলীয় কার্যালয়ে মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলন কতটুকু জমলো সেটি বড় কথা নয়, ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি আর দমন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনগণ সরকারকে ত্যাগ করেছে সেটিই বড় কথা। তবে আগামী কোরবানির ঈদের আগেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে মাঠে নামবেন বলে তারা হুশিয়ারি সংকেত দেন।
তবে বেগম খালেদা জিয়ার একজন উপদেষ্টা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এক নেত্রীর মাধ্যমে খালেদার মুক্তি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টা বলতে বলেছেন।