সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
ফুটপাতে যারা বসে তারা কাদের লোক নারায়ণগঞ্জের মানুষ যানে তাও বলেছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। আইভী বলেন, এর পর আবার শামীম ওসমান ৪ একর জমি দখলের করেছেন। নারায়ণগঞ্জের ওসমানী স্টেডিয়াম দখল করে আপনার বাবার নাম দিয়েছেন কেন, কি কারনে? সাবেক পৌরসভার সময় ৯ একর জমি দিয়েছিলো এই ওসমানী স্টেডিয়ামের জন্য। সেখান থেকে আপনি ৪ একর জমি দখল করে নিয়েছেন। সেই দখল করা জমিতে আপনি আপনার বাবার নাম দিয়েছেন। কেন দখল করেছেন? দখলের করার স্বভাবটা আপনি বন্ধ করুন। ১৫ জুন আলীগঞ্জ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্যও করেন।
অপরদিকে, শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম পাল্টা মেয়র আইভীসহ তার পিতা, পরিবার এবং ঘনিষ্ঠজনদেরকে দখলবাজ বলে মন্তব্য করেন। শনিবার (১৫ জুন) রাতে শাহ নিজাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে একটি পোস্ট দেন। শাহ নিজাম তার পোস্টে দাবি করেন, “আপনি (আইভী) আপনার বিশ্বস্ত লোক দিয়ে সিটি কর্পোরেশন এর সকল টেন্ডার নিজের দখলে রেখেছেন। আপনার পিতা জিওস পুকুর, বর্তমান আপনার বাড়িসহ বহু হিন্দু সম্পত্তি দখল করেছেন।
এর আগে এক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রদানকালে সাংসদ শামীম ওসমানকে প্রশংসায় ভাসিয়ে প্রশাসন ও সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলায় বিতর্কিত হয়ে সমালোচনার শীর্ষে এসে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাবশালী সাংসদের সবচেয়ে কাছের লোক শাহ নিজাম। তার নামে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের নিজে ওই জিডি করেন।
অন্যদিকে ১৬ জুন রোববার সকালে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন ঘাতক দালল নির্মূল কমিটির জেলার সভাপতি চন্দন শীল।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ কার্য্যালয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের জরুরি সভা করা হয়। চেম্বারের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যবসায়ী নেতারা পুলিশের ব্যাপক সমালোচনা করেন। জেলার ভদ্র ও পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে বহুল পরিচিত ক্রীড়া সংগঠক টিটুকে মাদক ব্যবসায়ী বানানো ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার সহ ক্ষমা চাইতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। তা না হলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সমস্ত দোকান-পাট, বাজার, বাস-ট্রাক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেটসমূহ বন্ধ রেখে শহর অচল করে দেয়ার আলিটিমেটাম দেয়া হয়।
শহরের ফুটপাতে হকার বসতে বাধা দেয়া নিয়ে হকার, পুলিশ, মেয়র আইভী সমর্থক ও সাংসদ শামীম ওসমান সমর্থকদের মধ্যে চতুরমুখী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি সংঘর্ষে রূপ নেয় এবং জনবিস্ফোরণ ঘটে। গত বছরের ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত দিন। সে দিন হকারদের ধরেছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভি। কিছু ক্ষনের মধ্যে নড়ে গিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। সেই হকারদের অবশেষে উচ্ছেদ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, অপরাধী যত বড় ক্ষমতাশালীই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধী সে জুয়া , মদের ব্যবসা চালাক, তেল চুরি করুক আর বালু চুরিই করুক আমরা কোন অপরাধীকে ছাড় দেবো না।
এছাড়া এসপি শহরের মানুষের সুবিধার জন্য ফুটপাত পরিস্কার করবেন বলে জানিয়েছিলেন । অবশেষে তাও গেল। স্বস্তি নগরবাসী স্বস্তিতে মানুষ।

