আজ মঙ্গলবার, ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো-পলাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমরা সাংবাদিকতার বিপক্ষে না, অপ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে উল্লেখ করে কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, সংবাদের মাধ্যমে দেশ স্বাধীনের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। সাংবাদিকতাকে আমরা সকলেই সম্মান করি কিন্তু অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আমরা সবাইকে নিয়ে রুখে দাঁড়াবো।

মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগ তুলে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর, ইত্তেফাক, স্থানীয় দৈনিক ডান্ডিবার্তা এবং সময়ের নারায়ণগঞ্জ ৪ পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।

বৃহস্পতিবার ( ৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত ‘খ’ অঞ্চল এর ১ম শ্রেণির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মাহমুদুল মহসীন এর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন পলাশ।

মামলা দায়ের প্রসঙ্গে জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায় চারটি পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। আমি শ্রমিক রাজনীতি, আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি, সামনে আমি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি তাই আমার বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করতে তাদের উৎসাহিত করেছে।

একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা আমার ইমেজকে নষ্ট করার জন্য বারবার এগুলো লিখছে। একটি বানোয়াট মিথ্যা গল্প তারা লিখে দিয়েছে। আমি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নই। হলুদ সাংবাদিকতা করে এমন একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ পরিবেশন করেন। তারা আমার অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্থ করার চেষ্টা করছে ।

যে ৪টি পত্রিকা আমাকে নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে তাদের সাথে আমি যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। এমনকি তারা আমার নামে যে সংবাদটি করেছে তার জন্য আমার সাথে কোন প্রকারের যোগাযোগ তারা করে নি। আমি এ কারণে আমি বাধ্য হয়েছি।
একটি বিশেষ গ্রুপ প্রায়ই বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির নামে ইচ্ছাকৃতভাবেই যে কোন ভাবেই হেয় প্রতিপন্ন করে দেয়। এটা তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া। যারা নিউজটি করলো তারা নুন্যতম মানবতা দেখিয়ে প্রতিবাদ লিপিটিই নিতে চাচ্ছে না। সংবাদ পরিবেশনের পত্র-পত্রিকার আইন-নীতিকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছে।

মানুষের কথা শোনাকে তারা অগ্রাহ্য করেছে তাই আমি আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। যে যতো বড়ই হোক না কেন আইনের উর্ধ্বে কেউ নন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোষিতের রাজনীতি করি, কোন শোষক শ্রেণি, কোন জুলুমবাজ, কোন ক্ষমতাওয়ালা যদি মনে করে তারা উল্টাপাল্টা লিখে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে তা বাংলার মাটিতে হবে না।

প্রকাশিত সংবাদে কোন বক্তব্য নেই উল্লেখ করে কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, একটি বানোয়াট মিথ্যা গল্প তারা লিখে দিয়েছে। একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা আমার ইমেজকে নষ্ট করার জন্য বারবার এগুলো লিখছে।

আমি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নই। হলুদ সাংবাদিকতা করে এমন একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ পরিবেশন করেন। তারা আমার অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্থ করার চেষ্টা করছে । আমার সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ তারা করে নি। বরং আমি নিজে থেকে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।

আমার আইনজীবী তাদেরকে লিখিতভাবে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে তাদের কাছে সত্যতা যাচাই এবং প্রতিবাদ দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা ড্যামকেয়ার। আমরা অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে চুপ করে থাকলে এরা এভাবে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। তাদের মধ্যে নুন্যতম সততা থাকলে তারা আমার সাক্ষাৎকার নিতো।

ষড়যন্ত্রের কারণ সম্পর্কে কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, আমি এতোদিন যাবৎ রাজনীতি করি এ ধরণের সংবাদ কখনো প্রকাশিত হয় নি। হঠাৎ করে এমন সংবাদের আবিষ্কার হওয়ার কারণ গত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি আওয়ামীলীগ হতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইবো। আসমানে যদি ফায়সালা হয় শেখ হাসিনার মাধ্যমে নির্বাচন করবো। এর জন্যই আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হিংসার বশবর্তী হয়ে এ সংবাদ পরিবেশনে প্রলুদ্ধ করেছে।

আমি আমার এলাকায় ছোট বেলা থেকেই রাজনীতি করি। আমাকে গল্প নাটকের মতো যেভাবে হুট করে গডফাদার বানিয়ে দেয়া হলো আমি তো একদিনের মানুষ নই আমি দীর্ঘদিন এ এলাকায় বসবাস করি। হুট করে ১৫ দিন ১মাসে এ অপপ্রচার কেন করা হচ্ছে।

আমি যখনই বলেছি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবো, আমার বাড়ির মধ্যে যখন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব আসলেন এটা নিয়েই অনেকের হিংসা শুরু হয়ে গেলো। এটা নিয়েও অনেকে লেখালেখি হচ্ছে। আমার ধারণা মূলত এ কারণেই এ চক্রটি এভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এক মিটিংয়ে ওবায়দুল কাদের পরবর্তীতে পলাশের বাড়িতে তাঁর আসা প্রসঙ্গে একজনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন দাবি করে কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, আমার বাসায় মাননীয় মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসায় পরবর্তীতে তাকে একজন ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছেন সাধারণ সম্পাদক কেন পলাশের বাড়িতে এসেছেন। এ বিষয়টি সাধারণ সম্পাদকের মাথাতেও রয়েছে।

মনোনয়ন চাওয়ায় বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমানের সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, আমি মনোনয়ন চাওয়ায় যদি শামীম ভাইয়ের ইগোতে লাগে তাহলে আমার কিছু বলার নাই। কারণ আমরা যখন ছাত্রলীগ করতাম তখন উনি আমাদের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। ওনার পেছনে থেকেও আমরা বিভিন্ন কর্মসূচী, মিছিল, মিটিং করেছি।
আমাদের বর্তমান রানিং একজন এমপি তিনি। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ছিলেন। এটি একটি গতানুগতিক প্রক্রিয়া ছেলে একসময় বাবা হয়, বাবা একদিন দাদা হয়। আমি কাজ করছি। এখন যদি আমার কাজের পরিপ্রেক্ষিতে আমি এমপি বা মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করছি না।

আমি কাজ করছি গরীব দুঃখী, নির্যাতিত, বঞ্চিত, অধিকারহারা মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে শক্তিশালী করার জন্য ওনার পাশে থেকে যে কোন কর্মসূচী পালন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এমপি মন্ত্রী হতে পারবো কি পারবো না এটা দেখার বিষয় না।

এদিকে দায়ের করা ৪টি মামলার মধ্যে দৈনিক ই-যুগান্তরের ও অনলাইন যুগান্তরের বিরুদ্ধে আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন কাউসার আহমেদ পলাশ। এতে দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক সালমা ইসলাম এবং ফতুল্লা থানা প্রতিনিধি আলামিন প্রধানকে আসামী করা হয়।

 

বাকি তিনটি মামলা ৫০০ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করেন জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ। এর মধ্যে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের স্থানীয় প্রতিনিধি এবং স্থানীয় পত্রিকার দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক হাবিবুর রহমান বাদলকে আসামী করা হয়েছে। অপর আরেক মামলায় দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জের সম্পাদক ও প্রকাশক জাবেদ আহমেদ জুয়েলকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন কাউসার আহমেদ পলাশ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ