সৈয়দ মো: রিফাত, না’গঞ্জ
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরও ২১আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা এলাকায় ৩টি হাতবোমা বিস্ফোরণ ও সিদ্ধিরগঞ্জের ভূইঁগড় এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক বা শনাক্ত করতে পারেনি। এছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ভূইগড়ে একটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল পুরো শহর জুড়ে, যেকোনো ধরনের নাশকতা রোধে এই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহর যেন কোন অপ্রিতিকড় ঘটনা না ঘটে সে কারনে নেয়া হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ। বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো ছিলো তল্লাশি চৌকি।
এত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও বুধবার (১০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে গলাচিপার সামনে হাতবোমার বিস্ফোরণ ও একই সময় ভূইঁগড় এলাকায় গাড়ি ভাংচুর করে দৃবৃর্ত্তরা। তবে, এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলায় বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্তি পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জানান, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখন পযংন্ত জানা যায়নি। তবে তাদের সনাক্ত করে আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
রায়কে ঘিরে জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পাশাপাশি র্যাবদের নিয়ে ভোর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের মূল মূল পয়েন্টে এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার ছিল।
বুধবার সকাল বেলা ১২টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের ট্রাইবুন্যালে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের বর্বরোচিত এই হামলার রায়।
সরেজমিনে শহরের চাষাড়া, বি.বি রোড, ২নং রেল গেট, জামতলা, মাসদাঈর, কালীরবাজার ও মন্ডলপাড়া সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। এসব এলাকার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
নারকীয় সেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জুামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।
আজ থেকে প্রায় ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশকে কয়েক মূহুর্তের জন্য প্রায় স্তব্ধ করে দেয়া হয়। ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন বুধবার বেলা ১২টায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা আলোচিত দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
বর্বরোচিত সেই হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান দলটির মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন দলটির কয়েক শ নেতাকর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বি.বি রোডস্থ নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বসানো হয়েছে পুলিশের তল্লাশি চৌকি। পুলিশের সঙ্গে রয়েছে র্যাবও। সকাল থেকেই শহরে মূল মূল জায়গা গুলোতে নিরাপত্ত ব্যবস্থা বেশ জোরদার ছিল। ভোর থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন পুরো শহর জুড়ে। তবে, হঠাৎ করে কি যেন হয়ে গেল। মূর্হুতের মধ্যে বোমা বিস্ফোরনের আওয়াজ শোনা যায় যদিও কেউ আহত বা নিহত হয়নি।