বিশেষ প্রতিবেদক
শহরের নিতাইগঞ্জ মোড়ে ২ মাস আগে একটি ওয়াজ মাহফিলের জন্য তোরণ নির্মাণ করা হয়। এরপর একই তোরণে আরও দুইটি ওয়াজ হয়েছে। তবুও এ তোরণ সরেনি এ ব্যস্ততম সড়ক থেকে। এতে করে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে এ মোড়ে। এদিকে দুর্বল বাঁশের উপর এ তোরণ নির্মাণের ফলে যে কোন সময়ে ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা।
একসময় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে দেখা মিলতো বিভিন্ন দলের নেতাদের শুভেচ্ছা সংবলিত তোরণ (অস্থায়ী গেট)। এক পর্যায়ে তোরণের আধিক্যে বিরক্ত হয়ে এর থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ। সেই থেকে সিটি কর্পোরেশন ও সড়কের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সড়কের আশেপাশে তোরণ বসাতে নিরুৎসাহিত করেন। একই সাথে অনুমতি সাপেক্ষে কিছুদিন তোরণ বসাতে অনুমতি নিলেও দ্রুত তা নিজ দায়িত্বে সরিয়ে ফেলতে হয়।
তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী ভূমিকা লক্ষ করা গেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ মোড়ে। ব্যবসায়ীক কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত এলাকায় প্রায় ২ মাস ধরে দাঁড়িয়ে আছে ঝুঁকিপূর্ন একটি তোরণ। ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে তোরণটি নির্মান করা হলেও নির্ধারিত সময়ে তা সরিয়ে নেননি আয়োজকরা। উল্টো একই তোরণ দিয়ে পরবর্তী সময়ে আরও ২ টি ওয়াজের ব্যানার সাঁটানো হয়েছে বলে দাবী করেন তোরণ সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা। ধারণা করা হচ্ছে, ডেকোরেটর ব্যবসায়ী এক খরচে একাধিক অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা থেকেই এ তোরণ সরানো হয়নি।
সাধারণত সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে দৃষ্টি নন্দন তোরণ তৈরীতে সুনাম রয়েছে ডেকারেটর ব্যবসায়ীদের। কিন্তু যখন তোরণ হয়ে পরে আত্মপ্রচারের অন্যতম মাধ্যম তখন তা হয়ে পরে জনসাধারণের গলার কাটা ও শহরের সৌন্দর্য বিনষ্টকারী বস্তুতে। শুধু তাই নয়, রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে পথচারী ও যাত্রীদের চলাচলে বাঁধাও তৈরী করে থাকে এসকল তোরণ সমূহ। আর এক্ষেত্রে নিতাইগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত তোরণটিও ব্যতিক্রমি ভূমিকা রাখতে পারেনি।
সরজমিনে দেখা যায়, নিতাইগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত তোরণটি দাঁড়িয়ে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ন ভাবে। তোরণের দুই দিকে ২টি করে বাশ গাথুনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যা প্রায় ভঙ্গুর। তবে তোরণের মাঝ বরাবর বেশ কিছু বাশ দিয়ে শক্তভাবে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তোরণটি দাঁড়িয়ে থাকায় এর স্থায়িত্ব হয়ে পড়েছে নড়বড়ে। যে কোন মুহুর্তে দমকা বাতাস কিংবা গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগলেই ভেঙ্গে পড়বে সড়ক কিংবা পাশের দোকানগুলোতে।
তোরণ সংলগ্ন এক ফল ব্যবসায়ী জানান, প্রায় ২ মাস যাবৎ এই গেটটি ফেলে রাখা হয়েছে। একটি ওয়াজকে কেন্দ্র করে গেট বানানো হলেও পরে আরও ২টি ওয়াজের ব্যানার টানিয়েছে মাহফিল আয়োজকরা। ওয়াজ অল্প কয়েকদিনের জন্য হলেও এই মোড়ে গলার কাঁটা হয়ে তোরণটি দাঁড় করিয়ে রেখেছে দিনের পর দিন। ফলে নিতাইগঞ্জে পণ্য লোড আনলোডের জন্য আসা ট্রাক সমূহ মোড় নিতে হয়ে বিপত্তির সম্মুখীন হয়।
এ ব্যাপারে নাসিক ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসাইন বলেন, নিতাইগঞ্জ মোড় এলাকাটি মূলত ৩টি ওয়ার্ডের কেন্দ্রবিন্দু। তবে গুরুত্বপূর্ন এই সড়কে এ ধরণের তোরণ বেশীদিন থাকতে দেয়া হবে না। আমি শুনেছি গতকালই ওয়াজের ব্যানার খুলে নিয়েছে। বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে, কাল পরশুর মধ্যেই তোরণটি সরিয়ে ফেলা হবে।