আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে যুব মহিলালীগ নেত্রী

অভিজাত হোটেলে নিজের নামে সবসময় রুম বুকড করে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালানো এবং অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনসহ ৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব-১।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় তাদের আটক করে র‌্যাব।
র‍্যাব জানায়, হোটেলটির বারে বিলবাবদ প্রতিদিন পরিশোধ করতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। বৈধ আয় অনুযায়ী, পাপিয়ার বাৎসরিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ শুধু গত তিন মাসেই তিনি ওই হোটেলে বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যিনি নারী সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭ টি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।

র‍্যাব আরো জানায়, আটক পপিয়ার তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি গাড়ির শো রুম এবং নরসিংদীতে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।

‘পাপিয়া সমাজ সেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন। এজন্য অধিকাংশ সময় নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করে আসছিলেন তিনি। পাপিয়া গত তিন মাসে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা হোটেল বিল পরিশোধ করেছেন। তার নামে ওই হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সবসময় বুকড থাকতো। হোটেলে প্রতিদিন শুধুমাত্র বারের খরচবাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন। হোটেলটিতে তার নিয়ন্ত্রণে সাতটি মেয়ের কথা জানা গেছে। যাদের প্রতি মাসে ৩০ হাজার করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন তিনি।’

র‍্যাব আরো জানায়, নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য পাপিয়ার একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন।

এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

র‌্যাব জানায়, আটক মতি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দেশে স্ত্রীর ব্যবসায় সহযোগিতার পাশাপাশি থাইল্যান্ডে তার বারের ব্যবসা রয়েছে। তিনি তার স্ত্রীর মাধ্যম প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতেন। অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য নরসিংদী এলাকায় তার কু-খ্যাতি রয়েছে।

আটক সাব্বির খন্দকার পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং আটক তায়্যিবা মতি সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পাপিয়া ও মতি সুমনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব রক্ষণাবেক্ষণসহ সব অবৈধ ব্যবসায় এবং অর্থপাচার ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে আসছিলেন তারা।

সর্বশেষ সংবাদ