আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আলোচিত হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামুনুল হককে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক এসপি ও পুলিশের তেজগাঁও জোনের বর্তমান উপকমিশনার হারুন অর রশিদ। ২০২০ সালে মোহাম্মাদপুরে একটি ভাঙচুরের মামলায় মামুনুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গতকাল দুপুরে হারুন অর রশীদ মামুনুলের গ্রেফতার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা বেশ কিছুদিন ধরে সারা দেশে হেফাজতের তাণ্ডব দেখেছেন। সরকারি স্থাপনাসহ থানায় হামলা ও ভাংচুর করা হয়। এ ছাড়া আমাদের মোহাম্মদপুর থানায়ও একটি ভাংচুরের মামলা ছিল। আমরা মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলাটির তদন্ত করছিলাম। আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, এই মামলার সঙ্গে তিনি জড়িত। ওই ঘটনা মামুনুল হক জানে এবং তিনি স্বীকারও করেছেন।’
ডিসি আরও বলেন, পল্টন থানাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও ভাংচুরের ঘটনায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। অধিকাংশ মামলা মামুনুল হককে আসামি করা হয়েছে। সে উস্কানিমূলক বক্তব্যও দিয়েছে। তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে হামলা করেছে। এসব ঘটনার পরে আমরা তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম। এখন সব ঘটনার অভিযোগের ব্যাপারে ও আমাদের মোহাম্মদপুর থানায় মামলার ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে তার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে, আমরা শুনেছি তাকে সেসব মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের মামলাটি হয়েছিল ২০২০ সালে। সেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে হেফাজত। এর প্রেক্ষিতে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুরসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। মামুনুলের বিরুদ্ধে অজস্র মামলা রয়েছে। আমাদের কাছে যে মামলাটি রয়েছে, তাতে আমরা সত্যতা পেয়েছি।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) মামুনুলকে আদালতে প্রেরণ করা হবে জানিয়ে ডিসি বলেন, আইনগতভাবে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। আদালতে পাঠানোর আগে থানাতেই রাখা হবে।
মামুনুলের রিমান্ড আবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে, ওইসব মামলা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল বিকালে সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে এক নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় জনগণ। পরে মামুনুল হকের সমথকরা রিসোর্টে এবং যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর করে। মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার সমর্থকরা। এঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হককে আসামি করে একাধিক মামলা হয়েছে। সে মামলায় পলাতক ছিলেন মামুনুল হক।
জানা গেছে প্রায় ১৭ টি মামলা রয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।