আজ শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্বামীর নির্যাতনে মৃত্যুর পথযাত্রী প্রতিবন্ধি স্ত্রী

বন্দর সংবাদদাতা
সাড়ে ৩ বছরের সংসারে ফুটফুটে এক কণ্যা রয়েছে শাহনাজ আক্তারের। সন্তানের মায়ায় শত নির্যাতনের পরও স্বামীর ঘরে থাকতে চায় প্রতিবন্ধি এ নারী। তবে তার স্বামী নগরের শহীদ নগর এলাকার শাহ জামাল কারনে অকারনে তাকে মারধর করে। খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে স্ত্রীর জীবন মৃত্যুর পথে ঠেলে দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনি সে।শাহনাজ ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েক বছর আগে ফরাজীকান্দা পূর্ব পাড়া মাদরাসা রোড নিবাসী মৃত এমারত হোসেন এবং হামিদা আক্তারের মেয়ে শাহনাজ আক্তার (২৮)’র সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শহিদ নগর এলাকার শাহ জামাল(৩৫) এর সাথে বিবাহ হয়। তাদের সাড়ে তিন বছরের একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান আছে নাম সুরাইয়া আক্তার। প্রতিবন্ধী হবার কারনেই কাল হয়ে দাড়ায় শাহনাজ আক্তার। স্বামী- শ্বাশুরী কর্তৃক অমানবিক নিযার্তন সহ্য করতে হয় দিনের পর দিন। কিন্তু একমাত্র কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে তাদের সব অমানবিক নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করে আসছেন তিনি ।

গত দুমাস আগে খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে মেয়ে রেখে বাপের বাড়ী তাড়িয়ে দেয় স্বামী শাহ জামাল। বাপের বাড়িতে আসার পর কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. কচি তাকে প্রতিবন্ধীর আর্থিক সহায়তা পাবার জন্য উপজেলা পরিষদে নিয়ে গেলে বন্দর উপজেলা নিবার্হী অফিসার শুক্লা সরকার তাকে বাচ্চাসহ একটি ছাগল উপহার দেয়।

খবর পেয়ে লোভী স্বামী-শাশুরী তাকে নিতে আসলে প্রতিবন্ধী শাহনাজ তার একমাত্র সন্তানের মায়া ছারতে না পেরে আবারও তাদের সাথে তার শ্বশুরবাড়ী শহিদ নগর চলে যায়। দু’দিনের মধ্যে তার স্বামী তাকে না জানিয়ে ইউএনওর দেয়া ছাগল দু’দিনের মধ্যেই বিক্রি করে দেয়। পরে জানতে পারলে শাহনাজ আক্তার প্রতিবাদ করলে তার স্বামী তাকে অকথ্য ভাষায় গালামন্দসহ প্রচন্ড মারধর করে। তাকে বিভিন্ন যায়গায় ভিক্ষা করতে বলে।

একমাত্র মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য বাসায় থাকতে চাইলে জোর পূর্বক তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন অলি গলিতে ছেড়ে আসতো পাষন্ড স্বামী । প্রতিবন্ধী স্ত্রীর ভিক্ষার টাকাই একমাত্র সম্বল ছিল স্বামী শাহ জামালের। ভিক্ষা করে টাকা এনে দিলেও বাড়ি ফিরে দেখতো তার মেয়ে সুরাইয়া অবহেলায় না খেয়ে পড়ে আছে খাটের এক কোনায়।অসহায় প্রতিবন্ধী শাহনাজ আক্তার প্রতিবাদ করলে তাকে স্বামী,শ্বাশুরী মিলে গরম খুন্তির ছ্যাকা পিঠের নিজ থেকে পায়ের উপর দিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালায়। চুল কেটে তার মেয়ে রেখে আধমরা অবস্থায় তার মায়ের বাড়ীতে পাঠায় বলে অভিযোগ শাহনাজের।

শাহনাজের ভাই তার একমাত্র বোনের এ রকম নির্যাতনের ঝাপ দেখে বন্দর থানায় সাধারন জিডি করতে গেলে এক পুলিশ কর্মর্কর্তা বলেন‘‘ জিডি এখানে করা যাবে না, যেখানে নির্যাতিত হয়েছে সেই শহিদ নগর এলাকার থানায় জিডি করতে হবে । শারিরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নারায়ণগঞ্জ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন, যে তার পিঠের মাংস পচে ক্যান্সার হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা খুবই আশংকাজনক। যে কোন সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে সে ।