আপনাদের কাছে এ বিষয়ে বলতে বাধ্য নই- প্রতিষ্ঠানের এমডি
আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠাচ্ছি- অ. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
অগ্নি নির্বাপক না থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে- নগর পরিকল্পনাবিদ
সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
সেরাজেম নারায়ণগঞ্জ, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। যেখানে সাধারণ মানুষদের থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। দৈনিক গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগিকে বিভিন্ন পর্যায়ে থেরাপি দেয়া হয় এই প্রতিষ্ঠানে। অথচ, সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় পুরো প্রতিষ্ঠানে নেই কোন অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা।
সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগিদের জীবনের ঝুকিও রয়েছে এখানে। কেননা অত্র প্রতিষ্ঠানে নেই কোন অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা। যেহুতু অত্র এলাকাটি একটি শিল্প এলাকা। ফলে, এলাকাটিতে রয়েছে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবসা, গার্মেন্টস-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একাধিক মার্কেট। প্রতিটি বিল্ডিং একে ওপরের সাথে মিশ্রিত। এসকল ভবনগুলোতে যেকোন দূর্ঘটনা সংগঠিত হলে মানুষের জান মাল নিরাপত্তা এবং দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসার কোন বর্হিঃগমন ব্যবস্থাও নেই। আর কোন কারণে যদি অগ্নিকান্ডের ঘটনা সংগঠিত হয় সেক্ষেত্রে হতাহতের সংখ্যাও অনেক হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
যেকোন সময় দূর্ঘটনা ঘটলে কৃর্তপক্ষের গাফলতির কারণে সেই দূর্ঘটনা থেকে মানুষকে বাচাঁনো সম্ভব হবে না। অর্থ উর্পাজনের সময় তাদের খেয়াল থাকলেও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকে তাদের নেই কোন খেয়াল। তাদের মতো কিছু অসাধু মালিকদের কারণেই আজ সাধারণ মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।
সরেজমিনে সেরাজেম নারায়ণগঞ্জের পুরো সেবাকক্ষ ঘুরে পাওয়া যায়নি কোন অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। অথচ শতশত মানুষ সেখানে সেবা নিতে আসে। দূর্ঘটনা ঘটলে কৃর্তপক্ষের সামান্য অবহেলাতে শতশত মানুষের প্রাণহানী হতে পারে।
এতো বড় প্রতিষ্ঠনে কোনো অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই এমন প্রশ্ন করা হয় সেরাজেম নারায়ণগঞ্জের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. নাসির আহম্মেদের কাছে। নিজের গাফলতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে কালিরবাজারে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আনতে যাওয়া হয়েছিলো তবে ছোট হওয়ার কারণে আনা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটি নবায়ণের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আরও বলেন, এটা দেখার বিষয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের। আপনারা কে? আমি আপনাদের কাছে এ বিষয়ে বলতে বাধ্য নই। তার এমন ক্ষিপ্ত হওয়াতে ধারণা করা যায়, তার প্রতিষ্ঠানের নবায়নের সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। যার কারণে তিনি প্রশ্ন করার সাথে সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যুথিকা সরকার দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমরা এসকল বিষয়গুলোতে সব প্রতিষ্ঠানকেই অবগত করি। সেই সাথে প্রায় সময় অভিযানও পরিচালনা করে থাকি। যেসকল প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই সেসকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠাচ্ছি।
কতিপয় এমন অসাধু মালিক মহাজনদের কারণেই দেশের বিভিন্ন যায়গায় দূর্ঘটনা ঘটার পর কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় না। যেকোন সময় যেকোন জায়গায় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তার প্রতিকারও রয়েছে। অথচ সেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরী করে সাধারণ মানুষদের কথা একটি বারের জন্যও চিন্তা করে না কৃর্তপক্ষ। নিজেদের পেট ভারী হলেই তারা খুশী।
একি বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটা সমন্বিত টিম (দল) গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। আমরা অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থার বিষয়ে অনেক ভবন দেখেছি। যেগুলোতে অন্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি জানতে নারায়ণগঞ্জ সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভেল ডিফেন্স কার্যলয়ে একাধিকবার মুঠোফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
নগরবাসীর মতে, যেসকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই। ওইসকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযান প্রয়োজন এবং কৃর্তপক্ষকে দন্ড দেয়া উচিৎ। কারণ মালিক নামে ওইসকল অসাধু ব্যক্তিবর্গের কারণে সাধারণ মানুষের প্রাণহানী হয়।