সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির (১৪ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত) সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল থাকছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে কোটা বাতিল প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়ার পর আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি অনুসৃত হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, তাদের বেলায় কোটা না হলেও সমস্যা হবে না। সরকার চাইলে তাদেরকে কোটা দিতে পারবে।
এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেড) কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ করে কোটা পর্যালোচনায় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। এছাড়া অন্য গ্রেডের তথা দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর চাকরিতে কোটা বহাল রাখার কথা বলেন তাঁরা।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার ব্রিফিংয়ে কমিটির প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানান, ওই গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ১৪ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত চাকরিতে কোটা রাখার সুপারিশ করা হয়েছে বলে এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
১ম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে কোটা বাতিল হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজ-কালের মধ্যে আমরা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। আশা করছি দুই-তিন দিনের মধ্যে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে।
এতদিন সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তাদের সেই আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন ‘কোটাই থাকবে না’। শতভাগ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। এরপর সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কারের প্রয়োজন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে সরকার।