আজ শুক্রবার, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘সন্ত্রাসীর সাথে দলের সম্পর্ক নাই’

স্টাফ রিপোর্টার :

যারা শামীম ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তার ছেলে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইন্টারনেট, ভূমিদস্যুতা ও তেল চুরি করে অর্থ সম্পদে বলিয়ান হয়েছে, সেই তারাই এখন ৫ আগস্ট থেকে ফতুল্লায় লুটপাট ও সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করছে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
গতকাল বিকেলে ফতুল্লার ভূইগড় এলাকায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যখন গত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করছিলাম তখন যারা শামীম ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তার ছেলে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইন্টারনেট, ভূমিদস্যুতা, তেল চুরি করে অর্থ সম্পদে বলিয়ান হয়েছে। এখন সেই তারাই ৫ আগস্ট থেকে এই ফতুল্লায় লুটপাট, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করছে। তাদের কবল থেকে ছোট দোকানও রেহাই পাচ্ছে না। এদের সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ।’
সম্প্রতি ফতুল্লার রেলরাইন বটতলা ও কাঠেরপুল এলাকায় দুই পক্ষে মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনা ব্যাপক আলোচনায় আসে। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘সেদিন ফতুল্লায় বিএনপি একটি শান্তি মিছিল বের করলে একদল চাঁদাবাজ সেই মিছিলে হামলা চালিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেছে। এরা গত ৫ আগস্ট থেকে ব্যাপকভাবে লুটপাট ভাঙচুর ও চাঁদাবাজি করছে। বিভিন্ন ফ্যাক্টরী থেকে ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী।’
কুতুবপুরে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা মনিরুল আলম সেন্টুকে ইঙ্গিত করে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিতে দলের চরম দুঃসময়ে দল থেকে সরে গিয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করেছে। সে নাকি এখন আবার বিএনপিতে ফিরতে চায়। ভুলেও না। সে এখন পঁচা মাল। এই মাল এখন আর বিএনপি খায় না।’
প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে জানিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘৫ তারিখ থেকে ফতুল্লায় যারা লুটপাট, ভাঙচুর চালিয়েছে তারা কারা তা আপনারা জানেন। তাদের তালিকা প্রশাসনকে দিবেন। না পারলে আমাদের দিবেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা প্রহণ করবো। চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। আমি গিয়াসউদ্দিন অন্তত তাদেরকে ক্ষমা করবো না। তারা মীরজাফার। তারা দলের সঙ্গে বেঈমানি করেছে, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছে। নৌকা মার্কার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক হতে পারে না। আমি তাদের মুখে থু দিই।’
গতকালের এই সভা বানচাল করতে আরো তিন দিন আগে থেকেই চেষ্টা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এতদিন সিংহের সঙ্গে লড়াই করেছি। ভয় পাইনি। বরং সে নিয়মিত আমার ভয়ে ভীত ছিল। এখন বিড়াল আমাকে ভেংচি দেয়। গত তিন দিন ধরে একটা পক্ষ নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল সভা বানচাল করার জন্য। আমি প্রশাসনকে বলেছি, আমি সভায় যাবো, যদি কারো বাবার ক্ষমতা থাকে আমাকে বাঁধা দিতে বলবেন। আমার পুলিশ লাগবে না। আমার নিরাপত্তা লাগবে না। আমার জন্য আমার নেতাকর্মীই যথেষ্ট সেসব সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে। আর আমার জন্য আমার আল্লাহ আছে।’
তিনি বলেন, এখানে শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু আছেন। তিনি বলেছেন, কিছু মানুষ এখানে শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। সেই তারাই আজকের সভা বানচাল করতে চেয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ।
কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনিপর সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মাহমুদুল হক আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন প্রমুখ।