আজ বৃহস্পতিবার, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সদরে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানে লড়াই

স্টাফ রিপোর্টার :
ভোটের আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে সদর উপজেলা ও ফতুল্লা ইউনিয়ন। আসন্ন ৯ই মার্চ ফতুল্লায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ইতিমধ্যেই এমপি শামীম ওসমান ও তার বলয় থেকে সমর্থন পেয়েছেন ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম। এবার প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্যের সমর্থনের অপেক্ষায় রয়েছে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা।
জানা গেছে, মামলা ও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ৪ই মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন। বহুল কাঙ্খিত এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষন করে আলোচনায় এসেছেন বেশ কয়েকজন। এই দুই পদ নিয়ে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। ভেতরে ভেতরে চলছে জোড় লবিং। আলোচনায় থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের সকলেই ওসমান পরিবার ঘনিষ্ঠ। শেষতক প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের সমর্থন পাবেন কে, সেই আলোচনা চলছে সর্বত্র।
জানা গেছে, সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা। এই অঞ্চলে শামীম ওসমানের অনুগত আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে একটি বৃহৎ বলয় তৈরী হয়েছে। এই বলয়ের অধিকাংশ নেতাই চাইছেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যানী পদ। কেউ কেউ চাইছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এমপি শামীম ওসমানের সমর্থন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ-নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি সাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন সহ আরো একাধিক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে।
আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় আছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ১নং কার্যকরি সদস্য আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক। চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে শরীফুল হকই গুডবুকে আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন নিজেই এই পদে প্রার্থী হতে চাইছেন না। তিনি এবার চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাশা করে বক্তব্য রাখতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে, এই পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর কথাও বলছেন কেউ কেউ। তবে, তার পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রত্যেকেই এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ কর্মী। প্রত্যেকেই প্রত্যাশা করছেন এমপি শামীম ওসমানের সমর্থন।
বোদ্ধা মহল বলছেন, এতেই জটিলতা দেখা দিয়েছে ওসমান বলয়ে। প্রত্যাশীতদের মধ্যে যেকোনো একজনকেই বেছে নিতে হবে শামীম ওসমানকে। এক্ষেত্রে কোনো একজনকে বেছে নিলে অন্যরা আশাহত হবেন। এতে বলয় ভেঙে পরার সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। যদিও সমর্থন প্রত্যাশী নেতারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, এমপি শামীম ওসমানের সিদ্ধান্তই মেনে নিবেন তারা।
এদিকে, চেয়ারম্যান পদ নিয়ে যখন ভেতরে ভেতরে জোর প্রতিযোগিতা চলছে, তখন ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাশা করায় অনেকটাই সেফ জোনে রয়েছেন আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক। তিনি ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছে পোষন করেছিলেন। তবে, শেষতক ফাইজুল ইসলামকেই সমর্থন করেন শরীফুল হক সহ অন্যান্য প্রত্যাশীরা।
জানতে চাইলে আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, সদর উপজেলার নির্বাচনে আমি ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছে পোষন করেছি। এখন আমার নেতা একেএম শামীম ওসমান ভাই যদি আমাকে এই পদে প্রার্থী হতে বলেন, তাহলে আমি নির্বাচন করবো। তার কথার বাহিরে কখনো যাইনি এবং ভবিষ্যতেও যাবো না। ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীর ক্ষেত্রেও আমার নেতার নির্দেশনার বাইরে যাইনি।’ শরীফুল হক বলেন, আমাকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সমর্থন করা হলে বিজয়ী হয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবো ইনশাআল্লাহ। এমপি শামীম ওসমান ভাইয়ের সহযোগিতা এবং পরামর্শ নিয়ে ফতুল্লার লালপুরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ব্যপক ভাবে কাজ করেছি। আগামীতেও জলাবদ্ধতা সহ গোটা সদর উপজেলার জনদূর্ভোগ নিরসনের জন্য কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।’