বিপ্লব হাসান : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল থেকে মাধবদী পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যেসব লেগুনা চলছে তার ভিতরে চলন্ত বোমা। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যেসব লেগুনা চলছে তার সবগুলোই এক একটি চলন্ত বোমা। সংবাদচর্চা পত্রিকার প্রতিবেদক বিপ্লব হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে এ কথা বলেছিলেন কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ আরিফিন । তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ গাড়ির সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষা ছাড়াই বা মেয়াদ উত্তীর্ণভাবে চলছে। অধিকাংশ গাড়ির মালিক নিয়মিত গ্যাসের সিলিন্ডার রি-টেস্টিং (পুনঃপরীক্ষা) করাচ্ছেন না। ফলে রাস্তায় শত শত বোমা নিয়ে ঘুরছেন গাড়ির মালিক ও সাধারণ যাত্রীরা। এগুলো বিস্ফোরিত হলে ক্ষতির পরিমাণ বোমা বিস্ফোরণের চেয়েও বেশি হবে। এই ঝুঁকি কমাতে হলে পুনঃপরীক্ষা জরুরি। এসব জেনেও আমরা গ্যাসের সিলিন্ডারটি নিয়মিত পরীক্ষা করছি না। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, আমাদের জীবনে অতিদাহ্য রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ে রয়েছে সচেতনতার অভাব। সম্প্রতি রূপগঞ্জে যানবাহনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও বেশ কয়েকটি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিছু দিন আগেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাইক্রোবাস-কাভার ভ্যান সংঘর্ষে, মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যান তিনযাত্রী। মানভেদে ২০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ থাকে একটি সিলিন্ডারের। প্রতি ৫ বছর পরপর যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নিয়ম। কিন্তু তা তোয়াক্কা করেন না অনেকে। এছাড়াও গ্যাস নেয়ার সময় গাড়ি থেকে নামার নিয়ম থাকলেও, তা মানেন না অনেক যাত্রী। লেগুনার চালকরা নিজে তো বটেই, অজান্তেই অন্যদেরকেও ঝুঁকিতে ফেলছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ভয়াবহ তাজা বোমার ন্যায় ক্ষতিসাধন করে। গাড়ির ফিটনেসের সঙ্গে রিটেস্ট বাধ্যতামূলক করা সত্ত্বেও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সিলিন্ডারযুক্ত যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি ৫ বছর পরপর রিটেস্ট (পুনঃপরীক্ষা) করার বিধান রয়েছে। সব ধরনের সিলিন্ডারের রিটেস্টের অনুমোদন দেয় বিস্ফোরক অধিদফতর। এছাড়া যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত এসব গাড়ি আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এসব গাড়ির ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও ফিটনেস বিহীন গাড়িতে গ্যাস ও তেল না দেয়া ব্যাপারে প্রতিটি পেট্রোল ও সিএনজি পাম্পে আমাদের চিঠি দেয়া আছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আমাদের অঙ্গীকার যারা দুর্নীতি ও অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।