আজ শনিবার, ২৪শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রূপগঞ্জে জাতীয় শোক দিবস পালিত

সংবাদচর্চা রিপোর্ট: নানা আয়োজনে রূপগঞ্জে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্তরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নারায়ণগঞ্জ -১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক । এরপর তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সীমিত পরিসরে আলোচনা সভা , পুরস্কার বিতরণ ও আমার বাড়ি আমার খামার ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। মন্ত্রী বলেন,  বিশ্বে বহু রাজনৈতিক হত্যাকান্ড হয়েছে। কোন হত্যাকান্ডে অবুঝ শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ছিলো না। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যাকান্ড বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবমানবিক হত্যাকান্ড। খুনিরা সেদিন শিশু রাসেলকে পর্যন্ত রক্ষা করেনি। রক্ষা করেনি যুব লীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে। ঘাতকরা বুঝতে পেরেছিলো জাতির পিতার পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য বাঙালিদের অতি আপনজন ছিলেন । বাংলাদেশকে মিনিপাকিস্থান বানানোর জন্য তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা সেদিন শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, খুনিরা বাংলাদেশের আত্মাকে হত্যা করে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়। বাংলাদেশকে পাকিস্তানপন্থার দিকে ঠেলে দেয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের শোষিত মানুষের মুক্তির কন্ঠস্বর । ‘আমরা যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি সেই পাকিস্তানিদের হাতে বঙ্গবন্ধু মারা যাননি, তিনি মারা গেলেন আমাদের বাঙালিদের হাতে। কত বড় অকৃতজ্ঞ আমরা! আমরা জাতির পিতাকে নিজেরা হত্যা করেছি। এটা একটা করুণ ইতিহাস।

গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বছরের পর বছর কারাবরণ করেছেন । ২৪ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তারপর তিনি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর তৈরী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির না। উনি সারা বিশ্বের নেতা। ৭ মার্চের ভাষণকে অস্বীকার করা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ববাসির একটি সম্পদ। পরাধীন জাতির মুক্তির একটি ঐতিহাসিক বার্তা। যেখানেই অন্যায় অবিচার ছিলো সেখানেই বঙ্গবন্ধু প্রতিবাদ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু উন্নয়নের প্রতীক। বঙ্গবন্ধু ক্ষুদা দারিদ্র্য মুক্ত সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা নির্মাণের জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটা স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, যতদিন বাঙালি জাতি আছে, ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার হৃদয়ে বেচে থাকবেন। তিনি বাঙলিদের চেতনার প্রতীক। তার মৃত্যু নেই। তিনি মহামানব।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল ভুঁইয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খাঁন, রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসান, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ সহ অনেকে। পরে অতিথিরা বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও চেক বিতরণ করেন।

এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে রূপগঞ্জে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে।