আজ বুধবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রূপগঞ্জে চালের বাজারে এখনো প্লাস্টিকের বস্তা

বিপ্লব হাসান রূপগঞ্জ প্রতিনিধি :
পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে পাটের তৈরি বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। চাল ও ধান বাজারজাতকরণে পাটের বস্তা ব্যবহারে সরকারের আইন মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে রূপগঞ্জের চাল ব্যবসায়ীদের উপর। যদিও চাল ও ধান বাজারজাতকরণে শুধুই পাটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।সরকার কর্তৃক মন্ত্রণালয়ের কড়া নির্দেশ রয়েছে, এই দুটি পণ্যের মোড়কে কোনো প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না।

কিন্তু সরকারের এই নির্দেশ মানছেন না চাল ব্যবসায়ীরা। চাল এখনো প্লাস্টিকের বস্তায় বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। উপজেলার তাঁত বাজার, হাজী আব্দুল হক সুপার মার্কেট,গাউছিয়া কাঁচাবাজার,মুড়াপাড়া বাজার,ইছাপুরা বাজার,তারাব বাজার, বরাব বাজার, বরপা বাজার,কাঞ্চন বাজার, আতলাপুর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে দেদারছে প্লাস্টিকের বস্তায় বিক্রয় করছেন চাল। মূলত প্রশাসনের কঠোর নজরদারির অভাবে চাল কল ও বিভিন্ন বাজারগুলোতে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যাগ ফের ফিরে এসেছে। প্লাস্টিকের মোড়ক পচে না। ফলে এগুলোর বর্জ্যইে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন। পয়োঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও বিঘিœত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) উপজেলার বিভিন্ন চালের আড়ৎ ও অন্যান্য বাজারে ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ দোকানে ক্ষতিকর প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করা হচ্ছে। প্রায় সব বাজার ও আড়ৎ ঘুরে একই অবস্থা দেখা যায়। মার্কেটের দোকান থেকে উধাও হয়ে গেছে পাটের বস্তা, সয়লাব হয়ে গেছে প্লাস্টিকের বস্তা।

এর কারণ হলো প্রশাসনের নজরদারির অভাব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাটকলগুলোতে এখন দুই ধরনের পাটের বস্তা তৈরি হচ্ছে। যে বস্তা রপ্তানি হয়, তার দাম ৬০-৭০ টাকা। আর দেশি চাহিদা মেটাতে তৈরি হওয়া বস্তার দাম ৪২-৪৫ টাকা। অন্যদিকে একই ওজন বহনে সক্ষম প্লাস্টিকের বস্তা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় ১৫-২০ টাকায়। সে কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে প্লাস্টিকের বস্তা বেশ জনপ্রিয়। ফলে এক শ্রেণীর অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা মুনাফার লোভে অবৈধ প্লাস্টিক ব্যাগ অবাধে ব্যবহার করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, চাল কল ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের বস্তায় চাল সরবরাহ করায়, তাদের সেই বস্তাতেই চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। বিষয়টি তাদের হাতে নেই। তবে পাটের বস্তার চেয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় পণ্য বেচাকেনা ও আনা-নেয়া বেশি সুবিধাজনক। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলার চালকল মালিক জানান, সরকার যেহেতু নির্দেশ দিয়েছে, আমরাও মানতে বাধ্য। তবে সবাই এ কাজ করে না। প্লাস্টিক বস্তা বাজারে যেমন সহজে পাওয়া যায়, পাটের বস্তা সহজে পাওয়া যায় না। দামও বেশি। তাই সরকারকেও এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।

এদিকে, উপজেলার পাটকল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারের নির্দেশ কার্যকর করতে আমরা সর্বনি¤œ দামে পাটের বস্তা তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করছি। কিন্তু এখনো প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিপণন হওয়ায় হতাশ হচ্ছি। চাল ব্যবসায়ী বিভিন্ন অজুহাতে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করছে। তাদের বক্তব্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা পাট শিল্প বাঁচাতে এবং আইন পালন করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, ২০১০সালে সরকার পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক আইন জারি করেন। আইনানুযায়ী, পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার না করে প্লাস্টিকের মোড়ক বা পলিথিন ব্যবহার করে, তবে ওই আইনের ১৪ ধায়ায় তা দন্ডনীয় অপরাধ হবে। এখন কেউ আইন অমান্য করলে শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।