আজ মঙ্গলবার, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রাস্তায় দাড়িয়ে পুরোনো নিয়মেই তোলা হচ্ছে যাত্রী

সংবাদচর্চা অনলাইনঃ

সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে মামলা ও জরিমানার হার বাড়লেও দূর করা যায়নি দীর্ঘ দিনের চেপে বসা বিশৃঙ্খলা। এখনো আগের মতো সড়কের যত্রতত্র দাড়িয়ে পুরোনো নিয়মেই যাত্রী তুলছে পরিবহনগুলো। তবে ট্রাফিক আইনে মামলা ও জরিমানার দিকে তাকালে অবশ্য বোঝা যায় ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে।

জানা যায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও শর্ত সাপেক্ষে গত মাসের ১ তারিখ থেকে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছে। ৫০ শতাংশ আসন খালি রাখা ও সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ৬০ ভাগ ভাড়াও বাড়ানো হয়। তবে অধিকাংশ বাসই স্বাস্থ্যবিধি না মানার পাশাপাশি পুরোনো নিয়মে সড়কের যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা নামানো করছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নগরীর ২নং রেল গেইট, উকিলপাড়া, চাষাড়া, লিংকরোডের শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুইগড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বাসগুলোকে দীর্ঘক্ষণ থামিয়ে যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করছে। অধিকাংশ পরিবহন চালকরা তাদের ইচ্ছানুযায়ী রাস্তার যেখানেই যাত্রী পাচ্ছে সেখানেই থামিয়ে দিচ্ছে। হেলপার কিংবা কনডাক্টর টেনে টেনে বাসে যাত্রী তুলছেন সেই পুরাতন নিয়মেই। ফলে পিছনে গাড়ির দীর্ঘ লাইনের জটলা সৃষ্টি হচ্ছে ও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ যাত্রীরা। এমনকি, চাষাড়া পুলিশ বক্সের ঠিক উল্টো দিকে, রাইফেল ক্লাবের সামনেই চলে যাত্রী ওঠা-নামা। এছাড়া যাত্রী ওঠানোর ক্ষেত্রে এবং নামানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না । তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশকে ম্যানেজ করেই লোকাল ও সিটিং এসব বাসগুলো দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা করতে পারছে।

অপরদিকে, যে সকল যাত্রীদের সড়কের মাঝেই উঠা-নামানো করা হচ্ছে তারাও দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়ছেন, অনেকে আবার দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন।

বাধন বাসের হেলপার রফিক মিয়া জানান, বাসের ভেতরে যাত্রী নিয়ম মতো বসছে। সেখানে বসার পর স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু যাত্রী উঠানো ও নামানোর ক্ষেত্রে টেনে ধরেই যাত্রী উঠানোর ব্যাপারে কোনো সদুত্তর মেলেনি।

সবুজ নামে এক যাত্রী বলেন, ভয়ে উঠতে মন চায় না। কিন্তু নিজস্ব পরিবহন নেই যেতে হবে দূরের পথ, হাঁটার অবস্থাও নেই গরমে। যাত্রী যেহেতু কম, বাসগুলো যদি নিয়ম মেনে ধীরে সুস্থে যাত্রী উঠানামা করতো একটু চলাচল করে স্বস্তি পেতাম।

নারায়ণগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, প্রথমত সকল বাস ড্রাইভার ও হেল্পারদের নির্দেশনা দেয়া আছে যাতে তারা রাস্তার মাঝখানে বা যত্রতত্র গাড়ি না থামায় বা যাত্রী উঠা-নামা না করে। তারপরও কেউ যদি নিয়ম অমান্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জের টি আই (প্রশাসন) মোল্লা তসলিম হোসেন বলেন, আমরা সরকারী স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি। রাস্তায় যত্রতত্র দাড়িয়ে উঠা-নামা সম্পূর্ণ নিষেধ। এরকম অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আসবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ১লা জুলাই থেকে নতুন ট্রাফিক আইন কার্যকর হবে, যে কোনো অনিয়ম দেখলে যথাযথ মামলা দেয়া হবে।

সচেতন মহলের মতে, শুধু আইন করে কার্যকর সুবিধা পাওয়া যাবে না, প্রয়োজন চালক-হেল্পারদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাদের নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার বা প্রশিক্ষণের আয়োজন করা যেতে পারে।