আজ রবিবার, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজধানীতে পৃথক অভিযানে ১৪ ছিনতাইকারী গ্রেফতার

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এবং তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় পৃথক তিনটি অভিযানে সংঘবদ্ধ ডাকাত/ছিনতাইকারী চক্রের ১৪ (চৌদ্দ) সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২। ডাকাতির সরঞ্জামাদি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ।

জানা গেছে  অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় আনা এলিট ফোর্স র‌্যাবের অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও চলমান আভিযানিক কর্মকান্ড। প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং সন্ত্রাস প্রতিরোধে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিশেষ অভিযানসমূহ দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। এলিট ফোর্স র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর হতে অদ্যবধি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আপোষহীন এবং নিরলস গ্রেফতার অভিযান চলমান রেখেছে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাবের ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত আছে।

গত ২৯ জুলাই  র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ডিএমপি ঢাকা মোহাম্মদপুর থানাধীন ব্লক-বি খিলজী রোডস্থ শ্যামলী শিশু পার্কের ভিতর পশ্চিম-দক্ষিন কোনে হালকা অন্ধকারাচ্ছন্ন ফাকা জায়গায় দেশীয় অস্ত্র-সরঞ্জামাদিসহ একদল ডাকাত ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ২৩.০৫ ঘটিকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড়ে পালানোর সময় সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ০৬ (ছয়) জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়। আটককৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। রাতের বেলায় তারা এরকম দুই বা ততোধিক দল একত্র হয়ে নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে বা ফাঁকা বাড়ীতে গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে ডাকাতি করে থাকে।

একই তারিখ ১৮.২৫ ঘটিকা হতে ২০.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়ীবাধস্থ জামাল উদ্দিনের নার্সারীর পূর্বপার্শ্বে বুদ্ধিজীবি রোডের পাকা রাস্তার উপর এবং মোহাম্মদপুর থানাধীন ব্লক-বি, খিলজী রোডস্থ শ্যামলী শিশু পার্কের ভিতর পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে পৃথক পৃথক দুইটি অভিযান পরিচালনা করে দেশীয় অস্ত্র-সরঞ্জামাদিসহ সংঘবদ্ধ ৮(আট)জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সক্রীয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর বিভিন্নস্থানে ছিনতাই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তারা ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং সপিংমলের সামনে থেকে ছিনতাই করে সাধারণ জনগনের সবর্স্ব লুট করে নিয়ে যায়। রাস্তা পারাপারের সময় সাধারণ জনগনের সাথে থাকা ব্যাগ চাকু দিয়ে কেটে ভেতরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ছোঁ মেরে ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

৪। আসামীদের নাম-ঠিকানাঃ
(১) মোঃ জুম্মন (৩০), পিতা-মৃত অলি মিয়া, সাং- চর মুগদা, থানা-রায়পুরা, জেলা-নরসিংদী, বর্তমান-রেললাইন বস্তি, বাউলবাগ, থানা-তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, ডিএমপি, ঢাকা।

(২) মোঃ বেলাল (২৮), পিতা-মোঃ মোহন মিয়া, সাং-গোতকান্দি, থানা-বাঞ্চারামপুর, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, বর্তমান-কাওরান বাজার (ভাসমান), থানা-তেজগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা।
(৩) মোঃ রুবেল (২০), পিতা- মৃত কাইয়ুম, সাংÑডুঙ্গরা, থানা-মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লা, বর্তমান-রহিমার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, নওগাঁ স্কুল, থানা-টঙ্গী, জেলা-গাজীপুর।

(৪) মোঃ শওকত (৩৫), পিতা-মৃত হামিদুল হক, সাং-দীঘাকান্দা কাদলবাড়ী, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ, বর্তমান-তেজগাঁও রেলষ্টেশন (ভাসমান), থানা-তেজগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা।
(৫) মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (২২), পিতা-মৃত সিরাজুল ইসলাম, সাং-বড় বাসাইল, থানা-আগলঝরা, জেলা-বরিশাল, বর্তমান-মকবুল মাষ্টারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবি কবরস্থান, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(৬) মোঃ নুর জামান(২০), পিতা- মোঃ আলীমুদ্দিন, সাং-বড় কমলাবাড়ী, থানা-আজিতমারী, জেলা- লালমনিরহাট, বর্তমান- হানিফ মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, মেট্রো হাউজিং, বছিলা, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(৭) মোঃ ইমন হোসেন (২২), পিতা-মোঃ শাহ আলম, সাং-বশিকপুর, থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লা, বর্তমান-লিটু মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, কাটাসুর, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(৮) মোঃ দুলাল হোসেন (১৯), পিতা-মোঃ আবুল কাশেম, সাং রাধানগর, থানা-দোহার, জেলা- ঢাকা, বর্তমান-বকুল নিবাস (ম্যানেজার আবুল কাসেম), কাটাসুর, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(৯) মোঃ মোবারক হোসেন(২৮), পিতা-মৃত আব্দুর রব, সাং-বানিয়াদি, থানা-রুপগঞ্জ, জেলা-নারায়নগঞ্জ, এ/পি-(ভাসমান) বাসা নং-৩৬/১, জহুরী মহল্লা, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা,

(১০) মোঃ উজ্জল(২২), পিতা-মোঃ গোলাপ মিয়া, সাং-অওলা, থানা+জেলা-কিশোরগঞ্জ, এ/পি-(ভাসমান), বাসা নং-৬, মেট্রোপলিটন হাউজিং, ক্যাম্পের বাজার, বালুর মাঠ, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(১১) উজ্জল গাইন(২৫), পিতা-সতীশ চন্দ্র গাইন, সাং-ভাটারাকান্দা, থানা+জেলা-ঝালকাটি, এ/পি-(ভাসমান), জয় বাংলা রোড, বড়বাড়ী, জিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-জয়দেবপুর, গাজীপুর।

(১২) মোঃ ফালান মিয়া @ ফয়সাল(২২), পিতা-মৃত লিটন শেখ, থানা+জেলা-মাদারীপুর, এ/পি-(ভাসমান), ফোরকান হাজীর বাড়ী, রোড নং-০১, মেহেদীবাগ, থানা-আদাবর, ডিএমপি, ঢাকা।

(১৩) মোঃ মহসিন(৩৫), পিতা-মৃত খোরশেদ আলম, সাং-নজরগঞ্জ, গেদু বেপারীর বাড়ী, থানা-কেরানীগঞ্জ,

জেলা-ঢাকা, এ/পি-(ভাসমান) ২৪/৪, রাকিবের বাসা, টিক্কাপাড়া, থানা-মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

(১৪) মোঃ মহরম আলী(২৬), পিতা-মৃত শামসুদ্দীন, মাতা-মৃত আমেনা খাতুন, সাং-দানাবাট্টি, থানা+জেলা-কিশোরগঞ্জ, এ/পি-(ভাসমান), আব্দুল ম্যানেজারের বাসার ভাড়াটিয়া, সিদ্দিক মাস্টারের ঢালী, বেগুনবাড়ী,

থানা-তেজগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা।

৫। উদ্ধারকৃত মালামাল ঃ-

ক) চাপাতি – ০২ (দুই) টি।
খ) চাকু – ০৪ (চার) টি।
গ) ছুরি – ০৫ (পাঁচ) টি।
ঘ) ড্যাগার – ০৩ (তিন) টি।
ঙ) মোবাইল – ০৯ (নয়) টি।

আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা শহরের সুবিধাজনক স্থানে বিভিন্ন লোকজনদের চাপাতি, ছোরা, চাকু ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিল। আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতেও র‌্যাব-২ কর্তৃক এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।