আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপন্যের দাম নাগালের বাইরে

নিত্যপন্যের দাম

নিত্যপন্যের দাম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রমজান চলে আসছে। নগরীর বাজারগুলোতে প্রতি বছরই রমজানের আগে বেড়ে যায় সকল পণ্যের দাম। ফলে রমজান চলাকালীন দাম আরোও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। এবার রমজান শুরু হওয়ার আগেই বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। কেজি প্রতি সবজির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। কমেনি চালের দামও। সরকার নির্ধারিত দাম থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস।
বুধবার (১৬ মে) সকালে সরেজমিনে নগরীর দিগুবাবু বাজার ঘুরে জানা যায়, রমজানকে কেন্দ্র করে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বিক্রেতারা। পাইকারি বাজারে দাম না বাড়লেও খুচরা বাজারে বেড়েছে প্রতিটি পন্যের দাম। প্রতিকেজি লতা চালের মূল্য ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা কেজি, নাজির সাইর ৬৮ টাকা কেজি। তবে বিক্রেতারা বলছেন, চালের সরবারহ বেশি হলে দাম কমে যাবে। যদি তা না হয় তাহলে রমজান মাসে দাম আরও বাড়ার আশংকা রয়েছে।
মুসুর ডাল ৯০ টাকা কেজি, খেসারি ডাল ৫০ টাকা কেজি, মটর ডাল ১১০ টাকা কেজি, মুগ ডাল ১৫৫ টাকা কেজি। তবে রোজা শুরু হলে এগুলোর দাম আরও বাড়বে বলে জানায় বিক্রেতারা। মুড়ি ৭০ টাকা কেজি। বেসন ৯০ টাকা কেজি, ময়দা ৬০ টাকা কেজি, চিনি ৬০ টাকা কেজি। সয়াবিন তেল ১০৫ টাকা কেজি। গোল বেগুন ৪০ টাকা থাকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি এবং লম্বা বেগুন ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি, দেশী পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি। লেবু ১৬ টাকা হালি, কাঁচা মরিচ ২০ টাকা কেজি। এর পাশাপাশি বেড়েছে আদা, রসুনের দাম। এককেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় যা গতসপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। রসুন ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। ছোলা ৮৫ টাকা কেজি।
সর্বশেষ সবজির খুচরা বাজারের তথ্যানুযায়ী, বেড়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। টমেটো ১০০ টাকা কেজি, বরবটি ৫০ টাকা কেজি, পেঁপে ২০ টাকা কেজি থেকে বেড়েছে ৬০ টাকা কেজি, প্রতি কেজি সিম ৮০ টাকা।
স্থিতিশীল রয়েছে আলু, পটল, ভেন্ডি, কহি মিষ্টি কুমড়া, জাল কুমড়া, শঁশা, কচুর লতির দাম। আলু ৮০ টাকা কেজি, পটল ৫০ টাকা কেজি, ভেন্ডি ৩০ টাকা কেজি, করলা ৪০ টাকা কেজি, কচুর লতি ৪০ টাকা কেজি, কহি ৫০ টাকা কেজি, গাজর ৫০ টাকা কেজি, লাউ ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, জালি কুমড় ৪০ টাকা, মিষ্টি কোমড় পিস ২০ টাকা, পুইশাক, ডাঁটাশাক, লাউ শাক, লালশাক, পাট শাক ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।
মাছের দাম ও চড়া। ইলিশ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহ টেংরা ৫০০ টাকা কেজি, পুটি মাছ ৩৫০ টাকা কেজি, কাজলি ৮৩০ টাকা কেজি, বড় চিংড়ী ৭০০টাকা কেজি, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা কেজি, রুই মাছ বড় ৩৫০ টাকা কেজি ছোট ৩০০ টাকা কেজি, শিং মাছ ১০০০ টাকা কেজি, মাগুর মাছ ৮০০ টাকা কেজি, পাবদা মাছ ৪০০ টাকা কেজি, পাংঙ্গাশ মাছ ১২০ টাকা কেজি, আইল মাছ ৮০০-১০০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৪৫০ টাকা কেজি।
ক্রেতা রাহেলা আক্তার বলেন, রমজান আসলে প্রতিবছর দাম বেড়ে যায়। যেমন সবজির দাম তেমন মাছ মাংসের দামও বাড়ে। কোন কিছুতেই হাত দেওয়া যায় না। কিন্তু কিছু করার নাই বাধ্য হয়েই কিনতে হয়। কারন রমজান মাসে আমাদের বাজারটা একটু বেশি দরকার।
অভিযোগ রয়েছে বিক্রেতারা বাজার পরির্দশনে আসা লোকজনকে সঠিক বাজার দর বলেন না। তারা বিক্রি দাম থেকে অনেক কম বলেন। যদি কোনো বিক্রেতা সঠিক দাম বলতে যায় তখন তাকে কৌশলে থামিয়ে দেয়া হয়।
আবার বেড়েছে মাংসের দামও। সরকার নির্ধারিত ৪৫০ টাকা দরে রাজধানির বাজারগুলোতে বিক্রি হলেও নারায়ণগঞ্জে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। খাসির মাংসও ৫০ টাকা বেড়ে ৭৫০ টাকা কেজি। বয়লার মুরগী ১৪৫ টাকা কেজি এবং লেয়ার মুরগী ১৮৫ টাকা কেজি, সোনালী (পাকিস্তানী) মুরগী প্রতি পিছ ১৮০-২০০ টাকা।
বাজারে আসা ক্রেতাগণ বাজার পরিদর্শনের আসা কর্মখর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেছেন, তারা যদি একটু চেষ্টা চালায় তাহলে নারায়ণগঞ্জে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। নয়তো ক্রেতাদের কষ্টার্জিত টাকা মুনাফালোভীদের পকেটে যাবে।