আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যখন ক্ষমতায় থাকি অনেক কিছু ভুলে যাই:পাপ্পা গাজী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের জ্যেষ্ঠপুত্র ও বিসিবির পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেছেন, কাইয়ুম চাচা আওয়ামীলীগের কর্মী ছিলেন । যুবলীগের কর্মী ছিলেন। যখন আমরা বিরোধী দলে ছিলাম সেই সময় উনার ভূমিকা ছিলো অপরীসীম। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি -জামায়াত জোট সরকারের আমলে এখানে (দাউদপুর) আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারে নাই। তখন শুধু হানা আর নির্যাতন চলেছে। সেই আমলের নেতা কাইয়ুম বঙ্গবাসী সাহেব। আল্লাহ্ উনাকে জান্নাত বাসী করুক। আমার বাবা গোলাম দস্তগীর গাজী সাহেব উনার মৃত্যুতে অনেক কষ্ট পেয়েছে।

বুধবার (২ মার্চ) দাউদপুরের দেবই মাদ্রাসায় রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল কাইয়ুম বঙ্গবাসী’র স্মরণ সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মন্ত্রীপুত্র এসব কথা বলেন।

গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা দাউদপুরবাসীর উদ্দেশে বলেন, কি আর বলবো আমরা মানুষ। আমরা ভুলে যাই। এইখানে (দাউদপুর) এক সময় এনামুল ভাইয়ের সাথে আমি অনুষ্ঠান করেছি। অনেকেই আমরা ভুলে গেছি। বিএনপির নির্যাতনের কথা আমরা ভুলে গেছি। আমরা ভুলে যাই আমার মা আমার জন্য কত কষ্ট করেছিলো। এই ভুলে যাওয়ার জগতে আমরা আসলটাই ভুলে যাই। আমাদের এবাদত আমাদের ভালো কাজ আমরা ভুলে যাই। যখন আমরা ক্ষমতায় থাকি আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই।
তিনি বলেন, এটা কোনো বিএনপি জামায়াতের অনুষ্ঠান নয়। এটা জাতীয় পার্টির অনুষ্ঠান নয়। এটা রাষ্ট্রদ্রোহী অনুষ্ঠান নয়। এটা আওয়ামী লীগের একজন কর্মীর স্মরণ সভা। অনুষ্ঠানে আসতে আসতে একটা কবিতা মাথার মধ্যে চলে আসলো। কবিতাটা কষ্টে বলতাছি সুখে না। জনগণ ভোট দিছিলো ,দায়িত্ব ছিলো মানুষ সেবা, এখন আবার পেশা হয়ছে শুধু জমির বায়না। পরিণত আমরা হয়ছি এখন একটি একটি হায়না, ভেঙ্গে গেছে আমাদের বিবেকের আয়না। যে কারণে আজকে আমরা এই স্মরণ সভায় দেই বাধা মানুষ জন হাসতে হাসতে ডাকে গাঁধা। আর কিছু বলতে চাই না। আমি সত্যি কষ্ট পেয়েছি। সত্যি আমার দুঃখ লেগেছে। একটা স্মৃতি চারণ , মুসুলমানের একটা অনুষ্ঠান , আমরা সবাই মিলে হাত তুলে তার জন্য দোয়া করবো। সবাই এখানে অংশগ্রহণ করবো।

তিনি বলেন, যখন ক্ষমতায় থাকি ভুলে যাই, আবার কিন্তু জনগণের কাছে আসতে হবে। আমরা ভুলি নাই, ১৩ বছর যাবত গোলাম দস্তগীর গাজী রূপগঞ্জের এমপি আমরা ভুলি নাই। ভুললে আমাদেরকে দেখতেন ভয়ের চোখে। কেউ আমাদেরকে ভয়ের চোখে দেখেন না , কোনোদিন দেখবেনও না। কারণ আমরা জানি প্রতি পাঁচ বছর পর পর একটা পাতিল নিয়ে আপনাদের কাছে আমাদেরকে আসতে হয়, ভোট ভিক্ষা চাওয়ার জন্য। আজকে আমাদের দলের মধ্যে আমাদের যে ভেদাভেদ কিছুই না, শুধু অহংকারের । যদি আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়, আমি বিনয়ের সাথে বলবো যে অভিভাবক আছে ,আসেন আপনারা কথা বলেন সমস্যার সমাধান করেন। কারণ যদি আমাদের ভেদাবেদের মধ্যে বিএনপিরা টি-টুয়েন্টি খেলে ছক্কা নিয়ে যায় তাইলে কিন্তু আপনেও ঘরে থাকতে পারতেন না, আমিও পারতাম না। আমরা কেউ থাকতে পারবো না। দয়া করে ভালো ভালো অনুষ্ঠান গুলো দলের মধ্যে আমাদের কোনো সমস্যা থাকে সেটা মাইকের সামনে না বলে ঘরে বসে অভিভাবসের সামনে বলেন সমস্যার সমাধান হবে।

পাপ্পা গাজী বলেন, আমাদের প্রয়োজন এক সাথে হাতে হাত মিলেয়ে কাধে কাধ মিলিয়ে বিএনপি-জামায়াত বা জাতীয় পার্টি যারাই আছে আমাদের বিরুদ্ধে বিরোধী দল তাদেরকে মোকাবেলা করা। দুই বছর পরেই আমরা নির্বাচন করবো। সেই নির্বাচন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে রাখার নির্বাচন।

বিএনপি জামায়াত সক্রিয় হয়ে কাজ করছে। আমাদের আওয়ামী লীগের মধ্যে মান- অভিমান থাকতে পারে, আমরা কিন্তু একজন আরেকজনের ভাই। বঙ্গবাসী চাচার ছেলেকে রাজনীতির অনেক কিছু দেখতে হবে। সবার পক্ষ থেকে তাদের পক্ষ থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই। কারণ আজকের অনুষ্ঠান ছিলো তোমার আব্বার উদ্দেশ্য। তোমার জীবন পরিকল্পনায় যদি কোনো স্বপ্ন থাকে ,যদি চাকরির পরিকল্পনা থাকে বা ব্যবসার স্বপ্ন থাকে আমরা তোমার ভাই তোমার সে স্বপ্ন পূরণ হবে।

রূপগঞ্জে আওয়ামী রাজনীতির ভবিষ্যত কান্ডারি গোলাম মর্তুজা পাপ্পা আরও বলেন, ২০১৪ সালে দেবই কেন্দ্রে তালা মার্ক কত ভোট পেয়েছিলো সেটা কিন্তু ভুলি নাই। তারা তাদের মতো নির্বাচন করেছে। আল্লাহ্ আমাদেরকে এই এলাকার মানুষের ভোটে নির্বাচিত করেছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। জনগণ আমাদের শক্তি। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী আমরা সবাই এক হয়ে এক সাথে রাজনীতি করবো, বিএনপি জামায়াতকে মোকাবেলা করবো। বঙ্গভাসী চাচার কথা যেনো আমরা না ভুলে যাই। এখানে (দাউদপুর) যারা আছেন তাদেরকে অনুরোধ করবো উনার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এখানে উনার নামে একটা কিছু যেনো করা হয়।

এসময় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা এমায়েত হোসেন, মতিউর রহমান আকন্দ, তাবিবুল কাদির তমাল, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শাহীন মালুম, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সেক্রেটারী মোস্তাফিজুর রহমান শাহীনসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।