এম.এ মোমেন,
বাণিজ্য মেলার শেষমূর্হুতে গত ২৯ জানুয়ারি শনিবার বাঁধভাঙা ভিড় আর লোকসমাগম বেড়েছে । পণ্যের মূল্য ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন কেনাবেচার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মূল্য ছাড়ে পছন্দের পণ্য কিনে ক্রেতারা খুশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেলার স্টলগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। তি ধরার ঠাঁই নেই। শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি হয়। শনিবারও রাত পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার ও শানিবার অধিকাংশ স্টলে পণ্যসামগ্রী বিক্রি হয়েছে আশাতীত। মেলায় লোকসমাগমে পুলিশ,স্বেচ্ছাসেবক ও আনসাররা তৎপর হয়ে ওঠে।
স্বাস্থ্যবিধি, সামজিক দুরুত্ব, আইনশৃঙ্খলা নিয়মীত ও ভোক্তা সংরক্ষন আইন বাস্তবায়নে গতকাল শনিবার প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেয়।ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতায় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা সার্বক্ষনিক মাস্ক পরে।মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছাড়া কাউকে মেলায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
মেলায় প্রবেশ করেই ক্রেতারা ছুটে যায় নিজ নিজ পছন্দের স্টলে। দর্শনার্থী নেই। সবাই যেন ক্রেতা। বাড়ি ফেরার পথে হাতে হাতে কেনা পন্য। কেউ খালি হাতে ফেরেনি। এতদিনের দর্শনার্থীরাই শনিবার ক্রেতা হয়ে যায়। তাতে স্টল মালিক ও বিক্রেতারা খুশি।
মেলায় স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে বিনামূল্যে ডায়বেটিক পরীক্ষা, রক্তের গ্রুপ নির্নয়,ব্লাড প্রেসার পরিমাপ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে বিআরবি হাসপাতাল সেন্টার।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নূরজাহান আরা খাতুন বলেন, মেলার ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত তিন জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফ এম সায়েদ।সবাই চিকিৎসকদের অধীনে আইসোলেশনে আছেন। মেলার স্টলে বিআরবি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারের পিসিআরের দায়িত্বে থাকা জুয়েল আহমেদ বলেন,মেলার স্টলে একজন চিকিৎসক, চারজন টেকনেশিয়ান করে দুই শিফটে সার্বক্ষনিক সেবা দিয়ে আসছে।
গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার মানুকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। আখতার ফার্নিচারের বিক্রয় প্রতিনিধি জামালউদ্দীন বলেন, শুক্রবার ও শনিবারের বিক্রিতে বিক্রিতে মেলায় আসা স্বার্থক হয়েছে। বিক্রি হয়েছে প্রচুর। শেষ মুর্হূতে সকল দর্শনাথীই যেন ক্রেতা হয়ে গেছে।প্রত্যেকেই নিজ নিজ পছন্দের পণ্য ক্রয় করেছেন।
মাতৃফ্যাশনের মালিক ইউনুসআলী বলেন, ব্লেজার ও কোট ৫০ ভাগ ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।এম এন এন্ড ফ্যাশনের বিক্রয় প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম বলেন,টি শার্ট, জুতা ৩০ থেকে ৪০ভাগছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
আর এফ এল এর বিক্রয় প্রতিনিধি সামিউল হাসান বলেন, হটপট একটি কিনলে একটি ফ্রি ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে।বাচ্চাদের খেলনার স্টলগুলোতে ২০ ভাগ ছাড়ে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ইলেক্টনিক্স স্টলে ২০ থেকে ৪০ ভাগ ছাড়ে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া টিভি,ফ্রিজ,এসি বিক্রিতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে।ফার্নিচার স্টল গুলো ৫ থেকে ২৫ ভাগ মূল্য ছাড়ে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে মিনিস্টার ইলেক্টনিক্সের স্টলে ১৫ থেকে ৪৭ ভাগ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
যমুনা ইলেক্টনিক্স এর ব্যাবস্থাপক মোহাম্মদ সামী বলেন,মেলার শেষ মুর্হূতে বিশেষ ছাড়ে দেদারছে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তাতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি।
মেলার পার্শ্ববর্তী এলাকার গৃহবধূ সাথী আক্তার বলেন,করোনার আতংকে এতোিিদন মেলায় আসেনি। শনিবার মানুষের সঙ্গে ঘেঁষাঘেষি করে জীবনের প্রথম মেলায় প্রবেশ করেছি। মেলায় মানুষ আর মানুষ তবে মূল্য ছাড়ে পছন্দের পণ্য ক্রয় করেছি। আমরা খুশি।মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থেকে আসা গৃহবধূ হালিমা খাতুন বলেন,৪-৫দিন মেলায় এসেছি। ভাল লেগেছে। শুক্র ও শনিবার পণ্য ক্রয় করেছি।
ঢাকার মিরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেলায় শতভাগ মানা হচ্ছে। সারাদেশে এইভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সহজ হতো।
মেলা আয়োজক রপÍানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন,মেলার শেষ মুর্হূতের কেনা বেচা ক্রেতা-বিক্রেতা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। আশাতীত বিক্রিতে বিক্রেতা খুশি। ৩১ জানুয়ারি মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।