নিজস্ব প্রতিবেদক:
বন্দরের ইস্পাহানী ঘাট এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলা থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেয় মিহাদ ও জিসান নামে দুই কিশোর। নিখোঁজের সাত ঘন্টা পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে মামলার বাদি এজাহারে দাবি করেছেন, এ খুন পূর্ব শত্রুতার জন্য। যদিও হামলা ঘটনার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী সজিব এক ভিডিও বার্তায় কিশোর গ্যাংয়ের কথাই বলেছেন। তার এ বক্তব্য ছড়িয়ে পরেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সজিব নামের এক কিশোর ভিডি তে সে বলেন, ইস্পানি ঘাটের নৌকার মাঝির সাথে এলাকার ছোট ভাইদের ঝামেলা হয়। ছোট ভাইদের নিয়ে সেই মাঝির সাথে ঝামেলা আমরা সমাধান করে দেই। ঘটনার দিন সেই মাঝি ফের ছোট ভাইদের সাথে তর্কে জড়ায়। ছোটভাই আমাদের কাছে আসে পরে আমরা ৬ থেকে ৭ জন মাঝির কাছে গিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। এ সময় একজন মুরুব্বি এসে জিজ্ঞাসা করে। কিছুক্ষনের মধ্যে সেই মরুব্বির সাথে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া সৃষ্টি হলে আমরা মুরুব্বির কাছে মাফ চাই। ওই সময় তিনি ফোন করে শাকিলকে। কিছুক্ষনের মধ্যে শাকিলসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যরা এসে আমাদের মারধর করতে থাকে।
আমরা সেখান থেকে পালিয়ে যে যার মত চলে যাই। পরে এ নিয়ে একটি ক্লাবে বিচার হয় ও সেখানে আমাদের মিলিয়ে দেয়া হয়। এর কয়েক দিন পরে আমাদের আরেক বন্ধু শান্তকে মারধর করে তারা। শান্তকে কেন মারা হয়েছে তার জানতে ওই দিন আমরা ৭ থেকে ৮ জন তাদের কাছে যাই। আমরা সবাই ৫ নম্বর ঘাট জেটিতে ছিলাম। ওরা চাপাটি রাম টা, লোহার পাইপ নিয়ে আসে। আমরা ওদের দেখে ভয় পেয়ে যাই। ওরা আমাদের মারধর করা শুরু করে। ওই সময় মিহাদ,জিসানসহ কয়েকজন নদীতে ঝাপ দেয় ও কয়েকজন নৌকায় উঠে যায়। শাকিলসহ ওর গ্যাংয়ের সদস্যরা নৌকায় উঠে পেটাতে থাকে ও পানিতে কোপাতে তাকে।
আমরা কয়েকজন নৌকা থেকে লাফ দিয়ে সিএসডি মাঠের দিকে উঠে পালিয়ে যাই। যাওয়ার সময় দেখেছি নদীর পানিতেই মিহাদ ও জিসানকে কোপাচ্ছে। কিছুক্ষন পর আমরা একে অপরের ফোন কল দেই। সবাই ফোন ধরলেও মিহাদ ও জিসানের ফোন বন্ধ ছিলো। এক পর্যায় মিহাদের খালাতো ভাই আলভী ও আমরা ৯৯৯ তে ফোন করে ঘটনা জানাই। সজিব ভিডিওতে বলেন, আলভীসহ আমাদের ফাঁসাতে চাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে আমার আবেদন প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করে অপরাধীর শাস্তি দিন। মিহাদ ও জিসানের পরিবারের কাছে অনুরোধ আপনার ছেলে আমাদের বন্ধু আমরা ওদের হারিয়ে আপনাদের মতো কষ্টে আছি। প্রকৃত আসামীদের বাদ দিয়ে অন্যদের ঘটনার সাথে জড়িত করলে মূল আসামীরা বেচে যাবে এটা আমরা চাই না। আমরা মিহাদ ও জিসান হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনায় জিসানের বাবা কাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে বিশ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে মোট ২১ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ ৬ জন কে গ্রেপ্তার করেছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ায় জিসানের স্বজনদের পরিবারের দাবি, ঘটনার সাথে জড়িত না থাকলেও আসামী করা হয়েছে তাদের। তারা জিসানের ভাই ও কাকা। জিসান হত্যার প্রকৃত আসামীদের শাস্তি চান তারা।
এ বিষয়ে জানতে সংবাদচর্চা থেকে জিসানের বাবা কাজিম উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।