প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি । তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের বিপুল পরিমাণ নাগরিককে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। আমরা শুধু মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিয়েছি।’ মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিতিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নীতি খুবই পরিষ্কার যে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে কাউকে আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত মানবিক বিবেচনায় মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ১৯৭২ সালের মে মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ওই সময় থেকেই উভয় দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বিরাজ করছে।’
তিনি দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অধিকতর অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এতে দুই অঞ্চলের দেশগুলো আরও লাভবান হবে।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা যোগাযোগ, ৪ দেশের মোটরযান চুক্তি বিবিআইএন ও বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোরের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের উল্লেখ করে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সোয়েমারনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গভীর প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনি হচ্ছেন বাংলাদেশের উন্নয়নের আলোকবর্তিকা।’
উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছ থেকে ইন্দোনেশিয়ার অনেক কিছু শেখার আছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর থেকে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বেড়ে চলছে। আমরা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশিদার হতে চাই।’
রাষ্ট্রদূত ইন্দোনেশিয়ায় শিল্পখাতের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা এখন ৫০ আসনের উড়োজাহাজ বানাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগ বাড়ছে এবং ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল ঘনঘন বাংলাদেশ সফর করছে। দুই দেশের মধ্যে আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সোয়েমারনো।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে তার দেশের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে ওষুধ কারখানা স্থাপনেও তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।