নিজস্ব প্রতিবেদক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আড়াইহাজারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে নানা সমীকরণ। জাতীয় পার্টির যুবসংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটনই হলেন সমীকরণের কেন্দ্রবৃন্দ।
স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে আওয়ামী লীগের একাংশ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি গুনজন চলছিল। অন্তরালে থাকা গুনজন পরিস্কার করে দিয়েছেন এরই মধ্যে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ লোটনকে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে। এতে বাবুপন্থী নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা কয়েকগুন বেড়ে গেছে। এদিকে বিএনপিতে দলীয় মনোনয়ন ঘুরপাক খাচ্ছে নজরুল ইসলাম আজাদ ও সমুনের মধ্যে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মহাজোটের মনোনয়ন আগামী ১৫ সেপ্টম্বরের মধ্যে পরিস্কার হয়ে যেতে পারে। এরই পর থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।
আওয়ামী লীগের অন্যান্য প্রার্থীদের নিয়ে না ভাবলেও লোটনকে নিয়ে ভিতরে ভিতরে চলছে চুল ছেড়া বিশ্লেষন। বর্তমানে অনেকটাই “গা” ছাড়া হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যক্রম।
এখানে বিএনপি বা অন্যকোনো দলের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে যত না উদ্বেগ আওয়ামী লীগের মধ্যে; তার চেয়ে বেশি উদ্বেগ বিরাজ করছে ক্লিন ইমেজধারী নেতা ও ঐতিহ্যবাহি পরিবারের সন্তান লোটন সিকদারকে নিয়ে। কারণ তার বাবাও প্রয়াত ডাক্তার সাদত আলী সিকদারও এমপি ছিলেন।
এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত ১৯৮৬ সালে ,এমএ আউয়াল একবার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি এমএ হান্নান দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পরে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্দেশে তিনি ১১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে ছিলেন।
২০১৭ সালের ১১ আগস্ট পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ স্থানীয় একটি জনসভায় কেন্দ্রীয় যুবসংহতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটনকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন।
এরশাদ মুক্তি আন্দোলনে ১৯৯৬ সালেও ৩০০ আসনের মধ্যে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছিলেন। তার বাবা প্রয়াত ভাষা সৈনিক ডাক্তার সাদত আলী সিকদার ১৯৭২ ও ৭৩ সালে সোনারগাও ও আড়াইহাজার থানার এমপি অথাৎ (এমএলএ) নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।
থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ হান্নান বলেন, পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করছে। উপজেলার সর্বত্র জাতীয় পার্টির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে লোটনের বিজয় নিশ্চিত।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একত্রিত হয়ে (মহাজোট) জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যদি অংশ নেয় । তাহলে আড়াইহাজারের আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে পারে। এতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি চরম সংকট দেখা দিবে।
থানা জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, দলের চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ লোটনকে এরই মধ্যে দলের প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন। এখন মহাজোট থেকে লোটনকে নিয়ে দরকষাকষি চলছে। আশা করছি মহাজোট থেকেও লোটনকেই প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। আ.লীগের নেতারা অনেকটাই এক মত হয়েছে।
লোটন বলেন, আড়াইহাজারের জনগণ পরিবর্তন চাচ্ছেন। দলীয় প্রার্থীর বিষয়টি ১৫ সেপ্টম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত হতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে। মহাজোট থেকে আমার মনোনয়নই চূড়ান্ত হবে। এমপি নির্বাচিত হতে পারলে আড়াইহাজার থেকে ভয়ভীতির রাজনীতি থেকে মানুষকে চিরতরে মুক্তি দিব। এমপি বাবু এখানে একটি শ্বাসরুদ্ধকর রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। এটা থেকে মানুষ মুক্তি চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একাদশ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য জাতীয় পার্টি থেকে আমাকে প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আমার বাবা প্রয়াত ভাষা সৈনিক ডাক্তার সাদত আলী সিকদারও এমপি ছিলেন।