আজ রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মসজিদে স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত সিলেটের পারভীন

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিন বাংলাদেশি রয়েছেন। এর একজন হলেন সিলেটের হুসনে আরা পারভীন (৪২)। তিনি তার অসুস্থ স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীর গুলিতে মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত পারভীনের ভাগ্নে মাহফুজ চৌধুরী। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদ রয়েছে। এর একটিতে নারীরা ও অন্যটিতে পুরুষরা নামাজ আদায় করে থাকেন। ঘটনার দিন শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজ ছিল। তাই নামাজের আধঘণ্টা আগে হুসনে আরা তার অসুস্থ স্বামী ফরিদ উদ্দিন আহমদকে নিয়ে মসজিদে যান। তিনি প্যারালাইসিসের রোগী ছিলেন। তাই তাকে হুইল চেয়ার করে মসজিদে নেওয়া হয়।

মাহফুজ চৌধুরী আরো বলেন, স্বামীকে মসজিদে রেখে নারীদের মসজিদে চলে যান পারভীন। এর কিছু পর পর পুরুষদের মসজিদে গুলির শব্দ শুনতে পান তিনি। দ্রুত স্বামীকে দেখতে ছুটে যান। কিন্তু এটাই তার জন্য হয়ে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। কারণ এসময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে গুলি করে। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যান পারভীন।
মাহফুজ চৌধুরী বলেন, মসজিদের বাইরে গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মুসল্লি হুইল চেয়ারে করে ফরিদ উদ্দিনকে মসজিদ থেকে বের করে নেওয়ায় তিনি বেঁচে গেছেন। কিন্তু হারিয়েছেন তার স্ত্রীকে।
ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার চকগ্রামে। আর তার স্ত্রী হুসনে আরা পারভীনের বাবার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গাল হাটা গ্রামে। এই দম্পতি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় বসবাস করতেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, পারভীন ও ফরিদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা সর্বশেষ ২০০৯ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন।

শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসলিমদের উপর নৃশংস হামলা চালান এক বন্দুকধারী।

দ্যা টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়, হামলাকারী নিজেকে ব্রেনটন ট্যারেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। ২৮ বছর বয়সী একজন শ্বেতাঙ্গ।

হামলার আগে ৭৩ পাতার টুইটারে একটি ইশতেহার আপলোড করেন ওই হামলাকারী। সেখানে তিনি এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে দাবি করেন। এ ছাড়া অভিবাসনের বিরুদ্ধে তার অবস্থানের কথা জানান।

তিনি ইশতেহারে বলেছেন, হামলা করে তিনি অভিবাসীদের দেখাতে চান যে, আমাদের ভূমি কখনও তাদের ভূমি হবে না। যতক্ষণ শ্বেতাঙ্গরা জীবিত থাকবেন।