সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
মশার উৎপাত নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই ! নিত্য প্রয়োজনীয় একটি পণ্যের নাম মশার কয়েল। শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে কয়েল ব্যবহার করে মানুষ। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় অতি মুনাফার লোভে দোকানগুলোতে মশা নিধনের জন্য যে সব কয়েল বিক্রি করে তা দিয়ে শুধু মশা নিধন নয় বরং বিভিন্ন পোকামাকড় ও টিকটিকি পর্যন্ত মারা যায়। এছাড়াও মশার কয়েল জ্বালালে মানুষের শরীর মরিচের মতো জ্বলে আর এসব কয়েল মানুষের জীবনের জন্য বড় ক্ষতিকর। তবে এসব কয়েল বিক্রি বন্ধ করতে না পারলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে এমন কয়েল পাওয়া যাচ্ছে। রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা এলাকার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন নামের কয়েল যেমন তুলশী, ঝিলিক, ফাইটার, নাইট, সুপার, মাস্টার, স্টার, রোজ, সেরা নিম, অতন্ত্র প্রহরী, জাম্বো, ফ্যামিলি, সান পাওয়ার, রকেটসহ অনুমোদনহীন কয়েলে বাজার সয়লাব।
গোলাকান্দাইল এলাকার বাসিন্দা আহসান আলী বলেন, এটাতো মশা মারা নয়, যেন মানুষ মারার কয়েল। মশার কয়েল জ্বালালে মুখ মরিচের মতো জ্বলা শুরু করে। মশার কয়েল জ্বালায় মশা তাড়ানোর জন্য কিন্তু এখন মশার কয়েলের ধোঁয়াতে ঘর অন্ধকার হয়ে যায়। কয়েল জ্বালালে মানুষের যেন দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। মশাও মরে, সঙ্গে তেলাপোকাও।
স্থানীয় চিকিৎসকরা বলছেন, নিম্নমানের কয়েল মানুষ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে দূষিত ধোঁয়ায় মানবদেহের শ্বাসকষ্টসহ কিডনি,লিভার নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে। শহরসহ গ্রামের বিভিন্ন দোকানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে এসকল অনুমোদনহীন ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মশার কয়েল। ওইসব কয়েলের বিষক্রিয়ায় বিকলাঙ্গ, ক্যান্সার, শ্বাসনালীসহ দীর্ঘমেদায়ী জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এমনকি গর্ভের শিশুর বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাড়তি লাভের আশায় দোকানিরা ওই কয়েল বিক্রি করলেও কোন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ মশার কয়েলের কারখানা। সরকারি বিধি বিধানের কোন রূপ তোয়াক্কা না করে মশার কয়েল কারখানায় তৈরি হচ্ছে নামে বে নামে মশার কয়েল। কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই প্রতিদিন নিম্ন মানের ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর লাখ লাখ মশার কয়েল নির্বিঘ্নে প্রস্তুত ও সারাদেশে সরবরাহ করে বাজারজাত করে চলেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ রোসোল দিয়ে মশা মরে, কারণ দরজা জানালা বন্ধ করে এরোসোল চারদিকে ছড়িয়ে দিলে মশা মরে যায়। কিন্তু কয়েল দিয়ে মশা মারার চেষ্টা করা হলে সেটা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হবে। এজন্য কয়েল প্রস্তুতে পরিমিত পরিমাণে উপাদান দেওয়া হয়। যাতে মশাগুলো চলে যায়। তাছাড়া এমন কিছু কয়েল আছে সেগুলোতে মশা মরা ত দূরের কথা চলেও যায় না। মশার উৎপাত থেকে মুক্তি চায় মানুষ।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম সংবাদচর্চাকে বলেন, বিএসটিআই অনুমোদিত মশার কয়েলের গুনগতমান ঠিক থাকলে মশা চলে যাবে। আর যে কোম্পানীর কয়েলে মশা মরে বা চলে যায় না সেটার গুনগতমান ঠিক নেই। আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।