আজ শুক্রবার, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মন্ত্রীত্বের ৩ বছর পূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গেল ৭ জানুয়ারি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের মন্ত্রীত্ব গ্রহণের ৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হ্যাট্রিক বিজয় অর্জন করেন । এরপর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। খড়া কাটে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী হওয়ার। তিনি দায়িত্ব পান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের । গত তিন বছরে তিনি মন্ত্রী হিসেবে সফলভাবেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রপ্তানি আয়ে পাটশিল্প চামড়াকে ছাড়িয়ে গেছে। তার গ্রহণ যোগ্যতা বাড়ছে।

সরকার বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ২৫ টি কল যখন বন্ধ করে দেয়, তখন শ্রমিকরা সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলে। সেই পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলে বন্ধ করিয়েছেন। এরপর অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত ( গোল্ডেন হ্যান্ডসেক সুবিধাসহ ) শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনা চেকের মাধ্যমে পরিশোধের উদ্যোগ নেন। সেই বাজেটে বরাদ্দ দেয় ৫ হাজার কোটি টাকা। শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকের পাওনার ৫০ শতাংশ নগদে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী অত্যন্ত সততার সাথে শ্রমিকদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করছেন। বন্ধপাটকলগুলো লিজ পদ্ধতিতে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২৮২ প্রকার দৃষ্টিনন্দন পাটপণ্যকে বহুমুখী পাটজাত পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সবশেষ তথ্য মতে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৪৩.৮৭ কোটি ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯.৫২ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০.৪৭ শতাংশ বেশি। তার নেতৃত্বে সোনারগাঁ বিশ্ব কারুশিল্প শহরের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের গর্ব। মন্ত্রীত্বের তিন বছরে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা , মহানগর ,উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। কারো সাথে বিরোধ করেননি। বিভিন্ন সময় তিনি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাই , সাধারণ সম্পাদক বাদল, মেয়র আইভী , মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, এমপি শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু ,সেলিম ওসমান , লিয়াকত হোসেন খোকাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মিটিং করেছেন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। সবার সাথেই তার সু সম্পর্ক রয়েছে।
মন্ত্রী হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার মন্ত্রণালয়ে এমপি শামীম ওসমান এবং নজরুল ইসলাম বাবুকে আমন্ত্রণ করে নিয়েছিলেন। গোলাম দস্তগীর গাজী তার কর্মগুনে ২০২০ সালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর এটা তার দ্বিতীয় বড় সফলতা। এ সফলতা তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর ভালোবাসায় পেয়েছেন। তার শুভাকাঙ্খীরা তাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নেতৃত্বে গত রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ,ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। কাঞ্চন পৌরসভায় প্রথম আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। দাউদপুরে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো না। তারাব পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছে। গেল ইউপি নির্বাচনে রূপগঞ্জে ৫টির মধ্যে ৪ টিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। কায়েতপাড়া ছিলো তার মধ্যে অন্যতম চমক।
মন্ত্রী হিসেবে গত ৩ বছরে স্থানীয় প্রশাসনের উপর তার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি । জেলা প্রশাসন ,উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসনের তিনি আস্থা অর্জন করেছেন। তার নামে নেই কোনো দুর্নীতির অভিযোগ। করোনাকালে তিনি রূপগঞ্জে গাজী পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশেপাশের জেলার মানুষকে রক্ষা করেছেন। নারায়ণগঞ্জের মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি খাদ্য সামগ্রী এবং করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ভুলতা ফ্লাইওভার , মুড়াপাড়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর উপর বীর প্রতীক গাজী সেতু উদ্বোধন হয়েছে। রূপগঞ্জে সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। মুড়াপাড়া কলেজ তিনি জাতীয়করণ করেছেন। তার সুফল পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সদস্য সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের টানা ১৩ বছর পূর্ণ করেছেন। তিনি ২০০৮, ২০১৪,২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।