আজ বৃহস্পতিবার, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বহিষ্কার ঠেকাতে চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এক বছরও হয়নি। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বড় দুই নেতা প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান ও গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে দলীয় পদ হারিয়েছেন। সেই একই পথে হাঁটছেন নারায়য়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার কথিত আওয়ামীলীগ নেতা লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল ওরফে বাবুল। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী বারদী ইউনিয়নে একটি ওয়াজ মাহফিলে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বেফাঁস বক্তব্য দিয়ে কঠোর সমালোচিত হয়েছেন লায়ন বাবুল। সেখানে তিনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী আসলেও নাকি তার হুকুম লাগবে। সেই বক্তব্যে এখনো দেশব্যাপী বইছে নিন্দার ঝড়।

এদিকে তার চেয়ারম্যান পদ নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। যেকোনো সময় চেয়ারম্যান পদও হারাতে পারেন। এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনাও শোনা যাচ্ছে। ফলে সব হারিয়ে নিশূন্য হয়ে যেতে পারেন লায়ন বাবুল। এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ইতিামধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের দেয়া অব্যাহতি বহাল রেখে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এ বিষয়ে সাতদিনের মধ্যে কারণ দেখানোর শোকজ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা আওয়ামীলীগ ডিসি-এসপি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিবে বলেও জানায় জেলা আওয়ামীলীগ।

তবে, এসব ঘটনায় সরকার ও তৃনমূলের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিব্রত ও অস্বস্তিতে পড়ে। এ ধরনের একজনকে দলে রাখা হবে কি-না তা নিয়ে চলছে জেলা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন আলোচনা ও গুঞ্জন।

আওয়ামীলীগের নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লায়ন বাবুল যে বক্তব্য দিয়েছেন সে প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা করেছেন এবং আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র এবং শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এজন্য তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। কারণ দর্শানো নোটিশ যদি সন্তোষজনক না হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ আরোপ করা হবে। অন্যদিকে শুধু দলীয় পদ নয় চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

রাজনীতি বোদ্ধারা বলছেন, এদের কাছে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক দর্শন নয়। বরং আওয়ামীলীগ সরকার হলো তাদের মিথ্যা লেবাসে ক্ষমতা পাওয়ার সিড়ি। আর এ সিড়ি যে কোন ভাবে নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় এলে তাদের জীবনের ভোগ বিলাস বাড়বে বরং কমবে না। তাই কালক্ষেপন না করে দলের নাম আর মুজিব কোর্ট পড়া এসব আগাছাকে উপছে ফেলার দিকে দুষ্ঠি দেওয়াটা বুচিত সরকার সত্যিকারের নেতাকর্মীদের।

দলের সূত্র জানায়, এদিকে লায়ন বাবুল দল থেকে বহিষ্কার ও তার চেয়ারম্যানশীপ ঠেকাতে লবিং করছেন। কিছু নেতার কাছে ধরনা দিচ্ছে । উপজেলা আওয়ামীলীগের ভুমিকা সেই গুঞ্জন অনেকটা সত্যে রূপ নিচ্ছেন। ফেব্রুয়ারি এক সুপারিশ না করে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব নিয়ে শোকজ করা হয়। এই এক সপ্তাহ যে ৫২ সপ্তাহেও শেষ হবে না সেটা বুঝা যাচ্ছে। মুলত বাবুলকে বহিস্কার থেকে বাঁচাতে শোকজ নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। আবার পরদিনই বাবুলকে নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের কর্মসূচি পালনে বিষয়টি পরিস্কার। একইভাবে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই যখন জেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ে বাবুলের গ্রেফতার দাবিতে ডিসি এসপি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করলো তখন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল উল্টো স্মারকলিপির বিরোধীতা করে বক্তব্য রাখেন মিডিয়াতে। এতেও বাবুলকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয় ।