- সিনিয়র হিসাবে আমাকে সম্মান দেখিয়ে বাকী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন করবে না-সানু
- এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না-হাফেজ পারভেজ
সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
পঞ্চম ধাপে হতে যাওয়া বন্দর উপজেলা নির্বাচনে হার্ডলাইনে রয়েছেন নিবার্চন কর্মকর্তারা কিন্তু জুজুর ভয়ে মাঠ ছাড়া রয়েছেন উপজেলার পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির ভয়ে নির্বাচন থেকে একেবারে সরে না গেলেও নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
শেষ ধাপে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় বন্দর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ। বন্দর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি ঘিরেই ছিলো ভোটের উত্তাপ। কিন্তু বারংবার সেই জনপ্রতিনিধির নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢেকে নিয়ে জুজুর ভয় দেখিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য করছে।
জানা যায়, ঈদের আগে নিজ প্রতিষ্ঠানে ডেকে নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতা সানাউল্লাহ সানুকে সর্মথন জানিয়ে নির্বাচন থেকে নির্দেশ দিলেও ঈদের পর গত শনিবার (৮ জুন) আবারও ঢেকে নমনীয় সুরে কথা বলেন সেই প্রার্থী। ব্যবসায়িক সুবিধা, নানা সুবিধা সহ বিভিন্ন আশ্বাস দেন। তাতেও কাজ না হলে ব্ল্যাক মেইলের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য করাচ্ছেন প্রার্থীদের।
জানা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার ফলে ৮ প্রার্থী মিলেই নির্বাচনি মাঠ গরম করে রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলহাজ্ব মো. নুরুজ্জামান, হাফেজ পারভেজ, মো. সানাউল্লাহ সানু ও শহিদুল ইসলাম জুয়েল, আক্তার হোসেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সালিমা হোসেন, নুরুন্নাহার বেগম ও মাহমুদা আক্তার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তবে গত ১২জুন উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষ্যে বন্দরে এসে হার্ডলাইনে কঠোর অবস্থানে ইসি রয়েছে বলে জানান তিনি। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, কেউ বলছে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছি ,পত্রিকার পাতা খুললেই দেখি নির্বাচন কমিশনকে শত শত গালি দেয়া হচ্ছে। এই যে গালি দেয় তার জন্য আমারা না যতটুকু দায়ি তার চেয়ে বেশী দায়ি ভোটগ্রহন কর্মকর্তারা। কিন্তু গালি খায় নির্বাচন কমিশন। বন্দর উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রকার অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচনে ভোট গ্রহনের সময় যদি কেউ প্রভাব বিস্তার করে তবে ভোট গ্রহন বন্ধ করে দিবেন। এমনকি অনেক সময় হতে পারে নির্বাচনের দায়িত্ব নিয়োজিত পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট আপনাকে একজনের ভোট আরেকজনকে দিতে বাধ্য করছে তবে সাহস করে নির্বাচন বন্ধ করে দিবেন আপনাদের সব রকমের প্রোটেকশন দেয়া হবে।
তবে ইসি কমিশনারের এমন হার্ডলাইনে থাকার পরও প্রার্থীদের মাঝ থেকে জুজুর ভয় কাটবে কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন বন্দরের ভোটারদের কাছে। তবে প্রার্থীদের প্রতি এহেন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্দর উপজেলার ভোট প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। তবে এখনো পর্যন্ত ভোটের মাঠ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরেছেন কিনা তা জানা যায়নি।
তবে এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফেজ পারভেজ (চশমা প্রতিক) নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনারের নিকট একটি দরখাস্ত লিখেছি, সেটা কতটুকু গ্রহনযোগ্য হবে সেটা নির্বাচন কমিশন জানেন।
উপর মহল থেকে, কোন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির ভয়ে কি নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে সকল ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীই বিষয়টি এড়িয়ে যায় এবং এই একই প্রশ্ন মো. সানাউল্লাহ সানুকে করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, এমন কোন বিষয় তারা জানা নেই তবে অন্য যেসকল প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে ভেবেছিলো তারা আমার প্রতি সম্মান এবং আস্থা রেখে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুনিয়ে নিয়েছে নিয়েছে। সিনিয়র হিসাবে আমাকে সম্মান দেখিয়ে বাকি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন করবে না বলে তারা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৮ জুন বলেই নির্বাচন কমিশন জানান।