আজ শুক্রবার, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচন কমিশন ঠুটো জগন্নাথ: তৈমূর

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির বিজয় র‍্যালিতে আমি রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে যাইনি। অথচ সরকারি দলের প্রার্থী এমপিদের নিয়ে একের পর এক সমাবেশ করে যাচ্ছেন। তারা আমাকে ও আমার কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে তিনটি অভিযোগ দিয়েছি। 

তিনি বলেন, তোড়ণ নির্মাণ ও সড়ক দখল করে মার্কা স্থাপন করা আচরণবিধির লঙ্ঘন। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল তারা তোড়ণ ভেঙে দেবে। কিন্তু তারা সেটা করেনি। এছাড়াও অন্যান্য আচরনবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারেও বারবার অবহিত করা হয়েছে। তারা শুধু আশ্বাস দিয়েছে কোনও কার্যকর ব্যাবস্থা নেয়নি। জনগণের মনে করে নির্বাচন কমিশন একটা ঠুটো জগন্নাথ, তারা সেই পথেই হাঁটছেন। তারপরেও আমি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চাই। শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

তৈমূর বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হোটেলগুলো চেক করলেই দেখতে পাবেন বিভিন্ন জেলার সরকার দলীয় নেতারা এখানে অবস্থান করছেন। সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলাকে নির্বাচনের কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে। আইনানুসারে সরকারি কোনও গাড়ি কোনও ডাকবাংলো ব্যাবহার করার নিয়ম নেই। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন। এই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই আমাদের সরকারি দলের মেহমানরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। 

তিনি আরও বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক তার কিছু সঙ্গী নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পলিশ সুপারের সাথে আলাপ করেছেন। তিনি অবশ্য বলেছেন তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে যাননি। কিন্তু তার বক্তব্য ও দেখা করতে যাওয়ার সাথে কোনও সমন্বয় নেই। প্রথমত তিনি নির্বাচনের আগে কোনওভাবেই প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তিনি নারায়ণগঞ্জের নাগরিকও না। এটা আইনগনভাবে আমি অন্যায় মনে করি। তিনি জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। এটা একজন উচ্চ পর্যায়ের সম্মানিত নেতার কাছ থেকে আমরা আশা করি না। 

এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জনগণ সন্দিহান হয়ে পড়েছে। আমি বাংলাদেশের যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সেই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই- নারায়ণগঞ্জের মানুষ প্রত্যাশা করে আপনি এ দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার মালিক হয়ে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন, স্বচ্ছ এবং সুন্দরভাবে করার জন্য ব্যবস্থা নিবেন। 

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে যদি ব্যালটের মাধ্যমে আশার প্রতিফলন ঘটে এতে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা অত্যন্ত আস্থার সাথে অনেকগুলো অভিযোগ করেছিলাম। সে অভিযোগের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বরং সে সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। 

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের চাহিদার কারণেই আমি নির্বাচনে এসেছি। পক্ষান্তরে আমাকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিভিন্ন উপাধি দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। আমি কোনও প্রার্থীর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমন করে বক্তব্য রাখিনি এবং ভবিষ্যতেও রাখব না। 

তিনি বলেন, গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমি নাকি বসে পড়ব। বসে পড়ার জন্য নির্বাচনে নামিনি। নির্বাচন করার জন্য নেমেছি। আমি একটা দল করি। আমি বিএনপির একজন সক্রিয় সদস্য। এই দলের জন্য রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। মিডিয়াতে দেখেছেন পুলিশ কতবার শারীরিকভাবে নির্যাতিত করেছে। তখন আমি দলের ক্যান্ডিডেট ছিলাম। নেত্রীর নির্দেশে আমি সরে দাড়াই। আজ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করিনি কেন আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল। কারণ আমি মনে করি- আমি দল করি, দলের প্রতি আমার অনুগত থাকা দরকার। তাই আমি দলের প্রতি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ নারায়ণগঞ্জের একটি সভায় বলেছিলেন একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এবং আরেকজনকে পরাজিত করতে আমরা তৈমূরকে বসিয়েছি। সেটাও আমি মাথা পেতে নিয়েছি। ২০১৬ সালে আমাকে মনোনীত করা হলেও আমি নির্বাচন করিনি। শহরবাসীকে দুর্ভোগ লাঘবের জন্যেই আজ আমাকে নির্বাচনে নামতে হয়েছে। 

পুনর্বাসন ছাড়া কোনও হকারের পেটে লাথি দেওয়া যাবে না, কারও ছাদ কেড়ে নেওয়া যাবে না। মৌলিক চাহিদার ওপর পৃথিবীতে কোনও আইন নেই। নারায়ণগঞ্জের জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে চলবে হকাররাও পুনর্বাসিত হবে। শহরে যানজট থাকবে না।