নিজস্ব প্রতিবেদক:
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনেই আর অংশ নিবেন না বলে জানিয়েছে বিএনপির নীতি নির্ধারকরা । তা কতটা কার্যকর হয় তা এখন দেখার অপেক্ষা । অনেক জায়গায় এই নির্দেশ অমান্য হয়েছে। তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ অন্যতম। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছে।
বিগত সময়ও নির্বাচনকে বয়কট দাবী করলেও একাধিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং কেউ কেউ জয় লাভ করে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে দলটির পক্ষ থেকে এখনো মেয়র প্রার্থীতা নিয়ে কোন ঘোষনা আসেনি। তবে দেখার বিষয় হাইকমান্ডের নির্দেশ যদি অটল থাকে তাহলে এবার তারা কী করবে।
জানা গেছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনী তফছিলের কথা জানিয়েছেন কমিশন। আর এমন ঘোষণার পর থেকে আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর পদ প্রত্যাশীরা। ইতমধ্যে একাধিক এলাকায় নির্বাচিত হয়ে কাউন্সিলর পদটি দখলেও রেখেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এরমধ্যে নাসিক ৯নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল প্রধান। যদিও তিনি একটি অনুষ্ঠানে সাংসদ শামীম ওসমানকে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে যুক্ত হওয়ার মত প্রকাশ করেছিলেন। নাসিক ১১নং ওয়ার্ডে রয়েছে বিএনপি’র এই ওয়ার্ডেরই সভাপতি জমসের আলী ঝন্টু, ১২ নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হাশেম শকু, ১৩নং ওয়াডে মহনগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, নাসিক ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সুলতান মাহমুদ, যদিও তিনি জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে আগমন করেছেন। নির্বাচনকালে বিএনপি দলটির সর্মথন নিলেও স্থায়ী কোন পদে আসিন হতে পারেননি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর থেকে সরকার দলের সাথে ই আতাত করে চলছেন। আর প্যানেল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারী কাউন্সিলর বিভা হাসান। তিনি ও তার পরিবার সহ স্বামী বিএনপির একনিষ্ট কর্মী। অন্যদিকে নাসিকের ৭,৮,ও ৯নং ওয়ার্ডের নারি কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন আয়শা আক্তার দীনা। যিনি মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
সূত্রে জানা গেছে, এরা প্রতেক্যেই বর্তমানে সরকার দলীয় নোকর্মীদের সাথে সখ্যতা রেখেই পথ চলছে। তাছাড়া এদের মধ্যে অনেকেই আবার বিএনপির সর্মথনে জনপ্রতিনিধি হলেও দলের কার্যক্রমের সাথে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন।তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ওইসব জনপ্রতিনিধি’র ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তও জানায়নি দলটির নেতারা। তাছাড়া নানা কোন্দল ও বিভক্তিতে ভাটা পড়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে। টানা তিনবারের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের কাছে যেন অসহায় বিএনপি। নিজ দলকে চাঙ্গা না করে বিরোধী দলের চাটুকারিতায় ব্যস্ত তারা। দলের ক্রান্তিকালে এ জেলায় ওই সকল নেতাকর্মীদের ভূমিকায় জনমনে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
এদিকে দলটির সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক নানা ইস্যুসহ আসন্ন নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। গত ২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের নেতাদের সাথে ভার্চুয়ালী বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা করেছেন দলটির হাইকমান্ড। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকাল পৌনে ৪টায় এ বৈঠক শুরু হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকের সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ক্ষমতার বাহিরে থাকা বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থতার কারণ খোঁজতে এবার নড়ে চড়ে বসেছেন দলের হাই-কমান্ড। এই সকল সমস্যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দলের মধ্যে বিভক্তি ও বিতর্কিত নেতারা। আর তারই সমাধানে হাইকমান্ডের নির্দেশে মাঠেও নেমেছেন প্রতিনিধি দল, এমনটি জানিয়েছেন দলটির বিশ্বস্ত সূত্র। ওই প্রতিনিধিদের তালিকায় উঠে এসেছে কারা দলের মধ্যে থেকে সাংগঠনিকভাবে বিভক্তি সৃষ্টি করে, গুরুত্বপুর্ণ পদে থেকে সাংগঠনিক বা কর্মসূচিতে উপস্থিত না থাকা, ক্ষমতাসীনদের সাথে আতাঁত, সাংগঠনিক সহযোগীতা না করা, সহযোগী সংগঠনে থেকে মূল দলের বাহিরে বিভক্তির রাজনীতি করা সহ নানা বিষয়ে সোচ্চার হয়ে দলটির সাংগঠনিক ক্ষমতা বাড়াতে নির্দেশনা দেয়া হয়। আর ওইসময়ই আসন্ন নাসিক নিবার্চনের প্রার্থী কে হবে তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এ নিয়েও খুব শিঘ্রই সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র। এদিকে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা থাকায়। এখনো নির্বাচনের প্রসঙ্গে পরিস্কার করছেনা দলটির অনেকেই। তারা বলছে হাইকমান্ডের নির্দেশ আসলেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। আর উপরের নির্দেশনাই ফাইনাল। যারা নির্দেশনা মানবে না দল থেকে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গছে দলটির কর্মকতাদের কাছ থেকে।