নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে কি ধরণের গণতন্ত্র বিরাজ করে একবার দেখেন। আওয়ামীলীগের ১০ জন প্রার্থী রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার প্রচার করছেন। একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ততা বজায় রেখে নেত্রীর প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অপরদিকে কাউসার আহমেদ পলাশের উপর দিয়ে কত জুলুম ঝড়-ঝাপ্টা যাচ্ছে। ওইখানে নৌকা চাওয়ার মতো পরিবেশও নাই। শুধুমাত্র ক্যান্ডিডেট হয়ে পলাশ নৌকার ভোট চাচ্ছে। আর একজন মানুষ সাহস করে কাজও করতে পারছেনা, ভোটও চাইতে পারছেনা। কি ধরণের দুরবস্থা নিয়ে মানুষ সেখানে বসবাস করছে। কি এমন হয় আর পাঁচজন দাড়িয়ে সেখানে নৌকার কথা বলতে পারেনা, নৌকায় ভোট চাইতে পারেনা। সেই তুলনায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে অসম্ভব ধরণের গণতন্ত্র আছে। মানুষ ভয়ের উর্ধ্বে উঠে গিয়ে প্রচার করছে।
শনিবার ( ৩ নভেম্বর) সকালে নগরীর ২নং রেলগেটস্থ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন । সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই।
কাউসার আহমেদ পলাশের উদ্দেশ্যে আইভী বলেন, আপনার ওখানে লোকজনকে ভয়ডরের উর্ধ্বে উঠে আরো বেশি করে চাইতে হবে। স্টেজে উঠে বলতে হবে, সবাই আসো। ভয় পাওয়ার কিছু নাই। ভয়কে সব জায়গা থেকে দূর করতে হবে। কোন ব্যক্তিকে আমরা ভয় পাবোনা।
গতকাল জাতীয় পার্টির অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের যেসব নেতাকর্মী লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন তাদেরকে আমি ধিক্কার জানাই। যদি নেত্রী মহাজোট থেকে এ আসনে কাউকে দেয় এরপর আমরা তার জন্য কাজ করবো। এরআগ মুহুর্ত্ব পর্যন্ত আমরা শুধু নৌকার কথাই বলবো।
আইভী আরো বলেন, একটি নিরাপদ স্থানে জাতীয় চারনেতাকে গুলি করে হত্যা করা হলো।পাশের সেলের কারাবন্দীদের তথ্য মতে, তখনো একজন পানি পানি করে চিৎকার করছিলো। কয়েকজন কারারক্ষী যখন দৌড়ে গিয়ে বললো তারা এখনো মরেনি। মেজর ডালিম আবার ফেরত এসেছিলো। এসে বেয়নট দিয়ে খুচিঁয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল। কতখানি নির্মমভাবে চারনেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যা করার করার আগে খন্দকার মোশতাক তৎকালীন মন্ত্রীপরিষদের সদস্য হওয়ার জন্য চারনেতাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। তারা একবাক্যে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলে বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানি করবোনা।
তিনি আরো বলেন, আজকে যারা আমরা দল করি, আওয়ামীলীগ করি, বঙ্গবন্ধুর অনুসারী তারা কিন্তু মুহুর্ত্বের মধ্যেই বেঁকে উঠি। হিসেবে-নিকেষ করার চেষ্টা করিÑ কি পেলাম, কি পেলামনা। মৃত্যু তো অনেক দূরের ব্যাপার, নগদে বিশ্বাস করি। নগদ কেন পেলামনা। একটা কথা বলতে দ্বিধাবোধ করিনা। একে অন্যের পেছনে লেগে থাকি। সেই সময়ের নেতাদের আদর্শ দেখুন আর আজকে আমাদের নেতাদের কথা চিন্তা করুন। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের ওই নেতাদের মতোই হতে হবে।
আইভী বলেন, হিসেবে নিকেষ করার প্রয়োজন নেই। আপনার দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় বলেই সারা দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে, কাজ হচ্ছে। মাথা উচু করে গর্বের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি।এটাই আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। আগের দিনের নেতাকর্মীরা নিজের চালচুলো বিক্রি করে, জমি-জমা বিক্রি করে দল, দেশ চালিয়েছে। এখনকার নেতারা কিন্তু চিন্তা করে আমার পকেটে কয়টা টাকা গেলো, আমি কি পেলাম।এটা হতে পারেনা। এমন চিন্তা করলে দলের অস্তিত্ব থাকবেনা। দলকে ক্ষমতায় আসতেই হবে। এটা নির্ভর করবে আমাদের কর্মকান্ডের উপর।
জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আরজু রহমান ভূইয়া, আব্দুল কাদির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউছার আহাম্মদ পলাশ, জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ বিষয়ক সম্পাদক ডা. নিজাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মরিয়ম কল্পনা, রানু খন্দকার, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নূর হোসেনসহ ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, যুবলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।