সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
হলিডে মার্কেটের কথা বলা হলেও হকার নামক অবৈধ দখলদাররা তা আমলেই নিচ্ছে না। শুক্র ও শনিবার নবাব সলিমুল্লা সড়কে তাদের বসার কথা থাকলেও এখন তারা প্রতিদিনই চাষাড়ার ব্যস্ততম নবাব সুলিমুল্লাহ সড়কের একটি লেন পুরোপুরিই গিলে ফেলেছে। আগামী চাঁদরাত পর্যন্ত তারা এই সড়ক থেকে সরবে না বলেও জানা গেছে।
এদিকে নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের একটি পাশ পুরোপুরি দখল করে নেয়ায়র কারণে ওই সড়কে চলাচলকারি হাজারও মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলছেন, এমন অবস্থা দেশের কোথাও নেই। নারায়ণগঞ্জ বলেই এতটা স্পর্ধা দেখাতে সাহস পাচ্ছে এসব অবৈধ দখলদারেরা। তবে, মানুষজন তাদের সার্বিক ক্ষোভ এখন উগড়ে দিচ্ছেন সাংসদ সেলিম ওসমানের ওপর।
তারা বলছেন, সেলিম ওসমান দুদিনের জন্য হলিডে মাকের্টের কথা বলে তাদেরকে এখানে বসিয়েছেন। এখন তারা প্রতিদিনই বসছে। তিনি যদি কন্ট্রোল করতে না পারবেন তাহলে কেন এসব দখলদারদের এখানে বসবার অনুমতি দিলেন, মানুষ যেই ভোগান্তি এখন পোহাচ্ছেন তাতো আর তাকে পোহাতে হচ্ছে না। দখলদারদের জন্য মানুষ কতটা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তা অনুধাবন করার জন্য তাকেও সাধারণ মানুষের কাতারে এসে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিশনপাড়া মোড় থেকে চাষাড়ামুখি লেন টুলের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয় হকার নেতারা। মিশনপাড়া থেকে চাষাড়ামুখি পুরো সড়কজুড়েই হকার। তারা এই সড়ক দখল করে নিজেদের মতো মালামাল সাজিয়ে সকাল থেকেই ব্যবসা শুরু করে। এতে করে সকাল থেকেই এই পথে কোনো প্রকার যান চলাচল করতে পারেনি। এতে করে শহরমুখী মানুষকে যানবাহন নিয়ে অপর লেনে প্রবেশ করতে হয়। এতে করে একদিকে যানজট অন্যদিকে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষজনকে।
শহরমুখি সাধারণ মানুষ হকারদের অমন দখলবাজিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, যতটুকু শুনেছি এই সড়কের ফুটপাতে হকারদের বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন দেখছি তারা পুরো সড়কই দখল করে নিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এই শহরের মালিক তারাই।
সূত্র জানায়, ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে গোল টেবিল বৈঠকে দুই এমপি মেয়র ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসবে না। পরবর্তিতে তারা নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের ফুটপাতে বসতে পারবে। এমন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে আন্দোলনে নামে শহরের হকার নামক অবৈধ দখলদারেরা। সর্বশেষ সাংসদ সেলিম ওসমানের সঙ্গে বৈঠক করে হকার নেতারা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ঈদ পর্যন্ত নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের ফুটপাতে বসবে তারা। এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার পরদিন ফুটপাতে বসতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন রক্তাক্ত হয়। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় হকারদের এক পক্ষ দফায় দফায় বিক্ষোভ করে শহরে।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই হকাররা নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে চাষাড়ামুখি অংশ নিজেদের দখলে নেয়। সেখানে তারা নিজেদের পসরা সাজিয়ে পুরো রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় নগরবাসীকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব দখলদাররা নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের চাষাড়ামুখি অংশটি দখল নেওয়ায় এ ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। এদিন এক লেন দিয়েই যান চলাচল করতে দেখা যায়।
১২ ও ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সূত্রে জানা গেছে, হকারদেরকে শুক্র ও শনিবার ব্যাতিত নবাব সলিমুল্লাসহ সড়কের ফুটপাতে বসার জন্য বলা হয়েছে এবং শুক্র ও শনিবার হলিডে মার্কেট হিসেবে রাস্তার এক পাশে বসার অনুমতি দেওয়া হয়।
এদিকে অমন নির্দেশনা কোনো হকারই মানছে না। তারা শনিবার একটি পথ সভার মাধ্যমে সাংসদ সেলিম ওসমানসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবদার করেন সড়কের এক পাশে চাঁদরাত পর্যন্ত প্রতিদিন বসার। এরপরই গতকাল সকাল থেকে তারা সড়ক বন্ধ করে দিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন।