আজ রবিবার, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দুর্নীতির আখড়া মাদারীপুর সদর হাসপাতাল!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দুর্নীতির শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের কার্যক্রম, এমন অভিযোগ তুলেছেন মাদারীপুরে গণমাধ্যমকর্মীরা। বুধবার বিকেলে মাদারীপুর নতুন শহরের টিআইবি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়। জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা সদর হাসপাতালের দুর্নীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে টিআইবিকে এ বিষয়ে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভায় আলোচনা করা হয় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে। সেখানে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। আবার কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছেন নানাভাবে। এ সময় টিআইবির মাদারীপুর জেলার সভাপতি খান মো. শহীদসহ অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর হাসপাতালে সরকারিভাবে যে পরিমাণ ঔষধ সরবরাহ থাকার কথা সেই পরিমাণ ঔষধ নেই। যা আছে রোগীরা তাও পাচ্ছে না ঠিত মতো। শুধু ঔষধ নয়, ২৪ঘন্টা গর্ভবতী নারীদের সিজারিয়ান থাকার কথা থাকলেও দুই থেকে তিনঘন্টা এই সুবিধা মিলছে। এছাড়া রোগীদের চিকিৎসা সেবায় অবহেলারও অভিযোগ মিলছে বারবার। এদিকে সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে বাড়তি ভাড়া নেয়ার হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

মতবিনিময় সভায় ডিবিসি নিউজ এর মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি মনির হোসেন বিলাস বলেন, সদর হাসপাতালে রোগীরা কি কি ঔষধ পেতে পারেন তার বিস্তারিত বর্ণনা সিটিজেন চার্টারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিচ্ছেনা। সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে যে সেবাটুকু পাওয়ার কথা তাও পাচ্ছে না।

দৈনিক খবর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আক্তার হোসেন বাবুল বলেন, সদর হাসপাতালের আরএমও দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ও একই পদে বহাল থাকায় এই দুর্নীতি থামছেনা। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জোরালো ভুমিকা রাখতে হবে।

দৈনিক ইনকিলাবের জেলা প্রতিনিধি আবুল হাসান সোহেল অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শশাঙ্ক ঘোষ নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক হাসপাতালে থাকার কথা থাকলেও তিনি তা থাকেননা। তিনি আলাদাভাবে বিভিন্ন স্থানে রোগী দেখছেন, যা নিয়মের বহির্ভূত।

এটিএন নিউজের মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম খান বলেন, হাসপাতালে দিনের বেলায় কিছু পরিমান ঔষধ দেয়া হলেও রাতের বেলায় তা দেয়া হচ্ছে না। ফলে বাহির থেকে ঔষধ ক্রয় করে আনতে গিয়ে অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির (টিআইবি) মাদারীপুরের সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, সদর হাসপাতালের এসব বিষয়ে সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। যাতে শিগগিরই এই অবস্থার পরিবর্তন হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. ফরিদ হোসেন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রোগীদের ঠিকঠাক মতো চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া হাসপাতালেও পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ রয়েছে। নিয়ম মেনেই হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে।