আজ সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বিশ্বম্ভরপুর সুনামগঞ্জ:

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায়, বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলে সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় গত একমাস ধরে জেলা শহর সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। এ কারণে এ সড়কপথ ব্যবহার করে জেলা শহর সুনামগঞ্জে যাতায়াতকারী সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওরপাড়ের কয়েক লক্ষাধিক বাসিন্দা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা শুক্রবার বিকালে তাহিরপুর উপজেলা সদর বাজারে মানববন্ধন করে ঈদের আগে এই সড়কটি সংস্কারে দাবি করেন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে ২৭ জুন তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কটির উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন রক্তি সেতুর পূর্বাংশের সংযোগ সড়কটির ৩শ ৫০ মিটার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে জেলা শহর সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সড়কপথ ব্যবহার করে তাহিরপুর উপজেলার নাগরিক ছাড়াও জেলার ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার একাংশের লোকজন যাতায়াত করে থাকেন।
উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মী ইয়াসির আরাফাত অপু বলেন, ২০১৮ সাল থেকে আনোয়ারপুর সংযোগ সড়কটির ৩ শত ৫০ মিটার রাস্তা সংস্কার কাজ চলছে গতিহীন ভাবে। যদি কচ্ছপগতিতেও কাজ হতো তবুও এই সময়ে শতবার এ স্থানটি পুনঃনির্মাণ করা যেত।
তাহিরপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এরশাদ আলী বলেন, সড়কটি আনোয়ারপুর অংশটি ভাঙ্গা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে আছি। সম্প্রতি বন্যায় আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে মালামাল পরিবহন ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাস্মীর রেজা বলেন, আসলে এই স্থানটি হাওরবাসীর বৃহদাংশের যাতায়াতের জন্য দুর্ভোগের কারণ হলেও এলজিইডির কোন দায়িত্বশীলতা দেখতে পাইনি। দীর্ঘদিন ধরে এ অংশটির জন্য যাতায়াতে ভুগান্তিতে আমরা।

এলজিইডি সুত্র জানায়, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুর রক্তি সেতুর পূর্বদিকে সংযোগ সড়কসহ প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কে কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাসেল ট্রেডিং। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী বাবুল আহমেদ বলেন, আমি গত মে মাসে ওয়ার্কওর্ডার পেয়েছি। পেয়েই কাজ শুরু করেছি। এর আগে জরুরী কাজ হিসাবে এ রাস্তায় কে কাজ করেছে আমি জানি না। আমার আরো এক বছর আছে কাজ শেষ করার। তিনি বলেন, রক্তি সেতুর পূর্বদিকের সংযোগ সড়কটির ৩৫০ মিটার স্থান নিয়ে উন্নত ডিজাইনে কাজ করতে হবে। নতুবা এ স্থানটি বর্ষায় ঢলের পানিতে ঠিকবে না।

এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, ঠিকাদারের কাজ চলছে। আশা করছি শীঘ্রই এই সংযোগ সড়কটি সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠবে। পরবর্তীতে তাকে বার বার ফোন দিলেও আর ফোন ধরেননি।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজ বলেন, এ রাস্তাটির কারণে সুনামগঞ্জের পূর্বাংশের বাসিন্দা হাওরাঞ্চলের বৃহদাংশের মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটেছে। তাই এ রাস্তাটি চালু রাখতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ আন্তরিকভাবেই উপজেলা প্রশাসনের রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের এই অংশটি স্থানীয় সরকারি প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রকৌশলীসহ আমরা সবাই এ স্থানটি (রক্তি সেতুর সংযোগ সড়ক) পরিদর্শন করেছি। অতিরিক্ত প্রকৌশলী কথা দিয়েছেন এখানে বর্ষায় ঢলের পানিতে যাতে ভাঙ্গন সৃষ্টি না হয় সে মোতাবেক কাজ করা হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে ঠিকাদারকে রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের জন্য বলা হয়েছে।