আজ বুধবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে জীবন যুদ্ধ চলছে। চলন্ত ট্রেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারন মানুষ। উপরে কিশোর-নিচে বৃদ্ধ মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা প্রাণ যায় মানুষের। ঢাকা-কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে ফতুল্লা আসে ট্রেন এসময় ট্রেন স্টেশনে থামার আগেই এক কিশোর ঝুঁকি নিয়ে নামার চেষ্টা করছে। এছাড়া ট্রেনের দুই বগির মাঝখানের বসে রয়েছে দুই বৃদ্ধ। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা । ট্রেনের দুর্ঘটনায় প্রান হানিতে লাশের মিছিল সারা বছর বাড়ছে। কিন্তু কেন হচ্ছে দূর্ঘটনা? সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারনে ও স্বল্প মূল্য সময় বাঁচানোর জন্য এছাড়া জিআরপি পুলিশের দায়িত্ব অবহেলাপর কারনে এসকল রেল দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করে নারায়ণগঞ্জের নাগরিক সমাজ।

১৬ কিলোমিটারের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের রেল পথে প্রতিদিন ১৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। স্বল্প খরচে হাজারো যাত্রীর পছন্দ এই রেলপথ। তবে এ পথে নিরাপত্তা নেই যেনেও নিজ দায়িত্বে চলাচল করেন যাত্রীরা। যার কারনে বিভিন্ন সময়ে ঘটে দূর্ঘটনা।

এর একটি প্রধান কারন টিকেট বিহীন ভ্রমন করে। এক শ্রেনির অসাধু ব্যক্তিরা জীবনের ঝুঁিক নিয়ে চলাচল করে থাকে। অসচেতন মানুষও না বুঝে চলাচল করে । এই পথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসচেতনতায় ও অল্প কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য জীবন নিয়ে প্রায় সময়ই মৃত্যু মুখী হয়ে পড়েন যাত্রীরা। যেন কেউ দেখার নেই।
চাষাড়া থেকে ঢাকা কমলাপুর গামী যাত্রী আব্দুর রহমানে বলেন, ট্রানে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে অসংখ্য লোক যাতাযাত করে থাকে। অসচেনতার কারনে ও দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবহেলার কারনে এসকল দূঘটনা বেড়ে চলছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানাই।

ফতুল্লা রেল স্টেশনে আরিফ বলেন, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে আসার সময় অনেকে দেখি টিকেট কাটে না। এছাড়া যারা ট্রেনের ছাঁদে বা দুই বগির মাঝখানে বসে যাতায়াত করেন তাদে কে রেলওয়ের কেউ কিছু বলে না। ছাত্রীরা স্কুল-কলেজে যাতায়াতের জন্য ট্রানে করে আসে এবং জীবনের ঝুঁিক নিয়ে চলাচল করে।
পাগলা এলাকার রিফাত সুলতান বলেন, রেলপথে পুলিশকে একমাত্র কমলাপুর ছাড়া আর নারায়ণগঞ্জ ছাড়া অন্য কোথাও দেখা যায় না।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে জিআরপি পুলিশের দায়িত্বে থাকা উপ-পরির্দশক মীর সাব্বির বলেন, আমরা তদারকি করি তবে জনগনের অসচেনতার কারনে ও স্থানীয় জনসাধারণের জন্য যারা যখন খুঁশি যে ভাবে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া আমরা অনেক সময় জরিমানা করে থাকি। তবে গনসচেতনা বৃদ্ধি করা হলে এই সমস্যা কমে আসতে পারে।

নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন মাষ্টার গোলাম মোস্তফা দৈনিক সংবাদচর্চা বলেন, ট্রেনের দুই বগির মাঝখানে চলন্ত অবস্থায় বহিরাগতরা টিকেট বিহীন মানুষ ঝুঁকি চলাচল করে এত করে প্রায় দূর্ঘটনা ঘটে। ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ ট্রেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ প্রদান করা হয়েছে । সেই প্রতিষ্ঠানের তদারকি না করার কারনে এ সমস্যার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন ছাড়া আর অন্য কোথাও জিআরপি পুলিশ নেই তাই এ ঝুঁকি আমাদের পক্ষে কমানো সম্ভব হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি দূর্ঘটনা ঘটেছে। এর দরুন প্রাণ গেছে প্রায় পাঁচ ব্যক্তির। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ফতুল্লার কোতালেরবাগ এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক যুবকের মৃৃত্যু হয়। গত ৮ মার্চ নগরীর উকিলপাড়া এলাকায় ট্রেনে কাটা পরে রাজিব দাস নামে এক যুবকের মৃত্যু ঘটে। এছড়া গত ১০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের কাটায় দুই বগির মাঝখানে বসে যাওয়ার পথে ভারসাম্য হারিয়ে ট্রেনে কাটা নিচে পড়ে গিয়ে এক অজ্ঞাত যুবক নিহত হয়।সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ রাতে নগরীর ১ নং রেলগেইট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের উপর থামানো একটি পণবাহী ট্রাকে উল্টে যায়। ট্রাকের ভিতরে লোক না থাকায় ঘটেনি কোন হতাহতের ঘটনা।